রবি মৌসুমের নতুন ফসল উত্তোলন শুরু হলেও কদর কমেনি পুরনো শুকনা মরিচের। তাই বাড়তির দিকে রয়েছে পণ্যটির দাম। তবে আমদানি বাড়তে থাকায় ভারতীয় শুকনা মরিচের দাম নিম্নমুখী রয়েছে। মূলত নতুন মৌসুমের শুকনা মরিচ ভেজা থাকায় পুরনো মরিচের চাহিদা বেড়েছে। ফলে প্রভাব পড়েছে দামে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি দেশি শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে ৮-১৫ টাকা। একই সময়ে ভারতীয় শুকনা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে এক মাসের মধ্যে ভালো মানের নতুন মৌসুমের দেশি মরিচের সরবরাহ বাড়বে। তখন মরিচের বাজার আবারো স্থিতিশীল পর্যায়ে নেমে আসতে পারে। মূলত রবি মৌসুমের মাঝামাঝিতে পুরনো মৌসুমের মরিচের মজুত ফুরিয়ে আসায় হঠাত্ করেই পণ্যটির চাহিদায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বাজারে গতকাল আমদানিকৃত শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৬২ টাকায়। এর আগে ভারত থেকে আমদানি করা শুকনা মরিচের সর্বোচ্চ দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৭২ টাকা। অন্যদিকে দেশীয় কুমিল্লা জাতের মরিচে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১২-১৩ টাকায়। এছাড়া কেজিপ্রতি বিন্দু জাতের মরিচে ৫-১০ টাকা বেড়ে ১২০, পঞ্চগড়ের মরিচে ৮ টাকা বেড়ে ১২৫ এবং রংপুরের মরিচে ১২-১৪ টাকা বেড়ে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন মৌসুমের ভালো মানের শুকনা মরিচের পর্যাপ্ত সরবরাহ শুরু না হলে দাম আরো কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে মেসার্স নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজারে নতুন মৌসুমের মরিচের সরবরাহ এখনো সেভাবে হচ্ছে না। নতুন সরবরাহ হওয়া মরিচগুলো কিছুটা ভেজা হওয়ায় পুরনো পণ্যটিরই কদর বেশি। মজুত কমে আসায় পুরনো মরিচের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দামও চড়া। তবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভালো মানের নতুন মরিচ এলে বাজার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
পাইকারি বাজারসংশ্লিষ্টরা জানান, কুমিল্লা, ভোলা, রায়পুর, বগুড়া, পঞ্চগড়, হাটহাজারী এলাকার মরিচের চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই বেশি থাকে। দেশীয় মরিচের মান ভালো হলেও আমদানিকৃত মরিচ শুধু দেখতে ভালো হওয়ার কারণে খুচরা বাজারে এর চাহিদা বেশি। তাই দেশীয় মরিচের চেয়ে দামও বেশি। অন্যদিকে পাইকারি পর্যায়ে ভোলা, বগুড়া ও হাটহাজারী অঞ্চলের মরিচের কিছুটা সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। নতুন মৌসুমের মরিচের সরবরাহ না বাড়লে বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করছেন তারা। ভারতীয় মরিচের আগাম সরবরাহ থাকায় দেশীয় মৌসুমের শুরুতে পণ্যটির চাহিদা তুলমামূলক কম। ফলে দাম কিছুটা নিম্নমুখী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা দেশে রবি মৌসুমের মরিচের পর্যাপ্ত আবাদ হয়। এ মৌসুমের শুরুতে কাঁচা মরিচের ব্যবহার বেশি থাকায় শেষ দিকেই শুকনা মরিচের উত্তোলন হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়া শীত মৌসুমের শুরুতে শুকনা মরিচের সরবরাহ শুরু হলেও কিছুটা ভেজা থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা আড়তে পণ্য পাঠান না। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো মানের মরিচের সরবরাহ শুরু হবে। এছাড়া ভোলা ও বগুড়া থেকে সবচেয়ে বেশি মরিচের সরবরাহ হলে বাজার আবারো স্থিতিশীল হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
সানবিডি/ঢাকা/আহো