অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেড ও মর্যাদা অবনমনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গত ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার এ কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা।
একই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষকরা।
চলমান আন্দোলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে সানবিডি২৪.কমের রাবি প্রতিনিধি মো. ইউনুস আলী হৃদয়ের সাথে কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (রাবিশিস) সভাপতি আনন্দ কুমার সাহা। সানবিডি২৪.কম এর পাঠকদের জন্য সাক্ষাতকারের চুম্বকঅংশ তুলে ধরা হলো:-
সানবিডি২৪.কম: স্যার কেমন আছেন?
আনন্দ কুমার সাহা: ভালো।
সানবিডি২৪.কম: শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতির অবস্থান কী?
আনন্দ কুমার সাহা: আমরা একটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। অর্নিদিষ্ট কালের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত আছে এবং থাকবে। পাশাপাশি গতকাল সোমবার সিনেট ভবনের সামনে সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।
সানবিডি২৪.কম: অবস্থান কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিনা?
আনন্দ কুমার সাহা: না। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (রাবিশিস) এর কর্মসূচি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সকল কর্মসূচির সাথে একাত্ম আছি। তবে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য এ কর্মসূচি পালন করবে রাবিশিস।
সানবিডি২৪.কম: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ আন্দোলনে কতটুকু সাড়া দিচ্ছেন ?
আনন্দ কুমার সাহা: শিক্ষকরা আমাদের এ আন্দোলনে সাড়া দিয়ে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। শীতকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর কোন বিভাগেই ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় নি। তারা সার্বক্ষণিক আমাদের আন্দোলনে সমর্থন এবং সহযোগিতা করছেন।
সানবিডি২৪.কম: আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীরা সেশন জটের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। আপনারা কী ভাবছেন?
আনন্দ কুমার সাহা: আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই কর্মসূচি দিয়েছি। গত ৮ মাস ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। সেশন জটের কথা বিবেচনা করেই তিন ঘন্টা কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। পরীক্ষা চালু রেখে শুধু ক্লাস বর্জন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন উল্লেখযোগ্য সাড়া না পাওয়ায় আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় আছে। বিগত সময়ে অনেক আন্দোলনে সেশনজট হয়েছিলো তা আমরা পেরিয়ে এসেছি। সুতরাং এখনকার পরীক্ষাগুলো পরবর্তীতে নিয়ে পরবর্তীতে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবো।
সানবিডি২৪.কম: কর্মবিরতির মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কয়েকটি বিভাগে পূর্বঘোষিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু রাবিতে কোন ধরনের পূর্বঘোষিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় নি। এমনকি একটি কোর্সের পরীক্ষা অবশিষ্ট ছিলো তাও নেয়া হয়নি। কেন?
আনন্দ কুমার সাহা: শিক্ষক ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত না মেনে তারা নিজেদের মতো করে পরীক্ষা নিয়েছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই। এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
সানবিডি২৪.কম: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষক ফেডারেশনের সাথে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
আনন্দ কুমার সাহা: আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে অত্যন্ত আশাবাদী। আশা করি তিনি আলোচনার মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নিবেন এবং এ সংকটের সমাপ্তি ঘটবে।
সানবিডি২৪.কম: স্যার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আনন্দ কুমার সাহা: আপনাকেও ধন্যবাদ।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/এসএস