বিশ্বজুড়ে বিমা খাতে মোট প্রিমিয়ামের ৮০.২ শতাংশ এসেছে ১০টি দেশ থেকে। যার মধ্যে একটি দেশের হাতেই রয়েছে বিশ্ব বাজারের ৪০.২৬ শতাংশ প্রিমিয়াম। সম্প্রতি সুইস রি এ তথ্য প্রকাশ করেছে ‘ওয়ার্ল্ড ইন্স্যুরেন্স: দি রিকভারি গেইনস পেস’ নামের সিগমা রিপোর্টে।
অঞ্চল ও দেশ ভিত্তিক প্রিমিয়াম আয়, জিডিপিতে বিমার অবদান, বিমার ঘনত্ব, বিমা বাজারের প্রবণতা, সামষ্টিক অর্থনীতি সূচক ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে বিশ্বব্যাপী বিমা বাজারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। বিশ্বের ১৪৭টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করা হলেও প্রতিবেদনটিতে স্থান পেয়েছে ৮৮টি দেশ।
প্রিমিয়াম আয়ের শীর্ষ ১০ দেশ
প্রিমিয়াম আয়ে বিশ্ব বিমা বাজারের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে গেলো বছর সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৩০ হাজার ৫৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৪০.২৬ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আগের বছরে দেশটিতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩২৯.৮ মিলিয়ন।
বিশ্ব বিমা বাজারে প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। ২০২০ সালে দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছর ২০১৯ সালে ছিল ৬ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ১০.১৪ শতাংশ এসেছে এই চীন থেকে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪৩৯.৯ মিলিয়ন।
প্রিমিয়াম আয়ে বিশ্ব বিমা বাজারের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাপান। গেলো বছর দেশটিতে সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৬.৬০ শতাংশ। ২০১৯ সালে চীনের মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৬ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১২৬.৫ মিলিয়ন।
বিশ্ব বিমা বাজারে যুক্তরাজ্যের অবস্থান ৪র্থ। দেশটিতে গেলো বছর ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৩২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে। যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৫.৩৮ শতাংশ। এর আগের বছরে দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬৬.৮ মিলিয়ন।
প্রিমিয়াম আয়ে এ বছর এক ধাপ এগিয়ে ৫ম স্থানে উঠে এসেছে জার্মানি। দেশটিতে গেলো বছর ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ২০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব বীমা বাজারে সর্বশেষ বছরে দেশটির অবদান দাঁড়িয়েছে ৪.১১ শতাংশ। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮৩.২ মিলিয়ন।
অন্যদিকে প্রিমিয়াম আয়ের র্যাংকিংয়ে এক ধাপ পিছিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির বর্তমান অবস্থান ৬ষ্ঠ। গেলো বছর ফ্রান্সের মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৩.৬৮ শতাংশ। এর আগে ২০১৯ সালে দেশটির প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬৭.৩ মিলিয়ন।
বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৩.০৮ শতাংশ আসে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে দেশটির অবস্থান ৭ম। ২০২০ সালে দেশটির লাইফ ও নন-লাইফ খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছরে ছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৫১.৮ মিলিয়ন।
এ ছাড়াও প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে ৮ম অবস্থানে রয়েছে ইতালি। ২০২০ সালে দেশটির লাইফ ও নন-লাইফ খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছরে ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ২.৫৮ শতাংশ আসে এই ইতালি থেকে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬০.২ মিলিয়ন।
কানাডা প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বের ৮ম দেশ। আন্তর্জাতিক বিমা বাজারের ২.২৮ শতাংশ প্রিমিয়াম এসেছে কানাডা থেকে। ২০২০ সালে দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগে ২০১৯ সালে এই সংগ্রহ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩৮.০ মিলিয়ন।
বিশ্ব বাজারে প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে ১০ম অবস্থানে রয়েছে তাইওয়ান। ২০২০ সালে দেশটির বিমা খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব বাজারের ১.৮০ শতাংশ। এর আগে ২০১৯ সালে তাইওয়ানের মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ৮২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২৩.৬ মিলিয়ন।
এএ