দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশের পাশাপাশি অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় পুরোদমে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার। বিশেষ করে দেশীয় প্রযুক্তি পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। ব্যতিক্রম হলো এবছর শুরু থেকেই ব্যাপক সংখ্যক ক্রেতা মেলায় আসছেন, বিক্রিও হচ্ছে আশারনুরূপ; বিক্রেতারা সন্তুষ্ট। মেলা যতই শেষের দিকে গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে ভিড়, ক্রেতা- দর্শণার্থীর সমাগম।
গত কয়েকদিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বরাবরের মতো এবারো মেলায় ক্রেতা চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো। যার সিংহভাগ বাজার শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়ালটনের দখলে। আর তাই মেলায় অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে ওয়ালটনের প্রযুক্তি পণ্যের প্যাভিলিয়নটি।
এবারের মেলায় উচ্চমানের লেটেস্ট প্রযুক্তি পণ্যের সমাগম ঘটিয়েছে ওয়ালটন। সেইসঙ্গে ক্রেতা-দর্শণার্থীদের নজর কাড়ছে ওয়ালটনের ৩তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ও ব্যতিক্রমী প্যাভিলিয়ন। বিক্রির দিক দিয়েও বিশেষ করে টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন। জানা গেছে, এবারের মেলায় গ্রাহকদের চাহিদা ও রুচির ভিন্নতা অনুযায়ী আকর্ষণীয় ও উচ্চ মানসম্পন্ন ৪ শতাধিক মডেলের বিভিন্ন
ধরণের পযুক্তি পণ্য প্রদর্শণ করছে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এরমধ্যে রয়েছে প্রায় অর্ধশত নতুন মডেলের পণ্য। অসংখ্য মডেল, আকর্ষণীয় ডিজাইন, উচ্চ গুণগতমান, সাশ্রয়ী মূল্য, দেশব্যাপী বিস্তৃত সার্ভিস নেটওয়ার্ক ও সর্বোপরি দেশীয় ব্র্যান্ড হওয়ায় প্রতিদিনই ক্রেতা- দর্শণার্থীদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানান, একসময় প্রযুক্তি পণ্যের সমস্ত ফোকাস ছিলো বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর উপর। এখন সে জায়গা দখল করে নিয়েছে ওয়ালটন। এটা দেশের জন্য একটি ইতবাচক দিক। গৃহবধূ ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, এখন মেলায় আসলে সবাই ভাবে একবার ওয়ালটন ঘুরে যাই, দেখি কি কি নতুন প্রযুক্তি পণ্য আসলো।
মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মীরা জানান, এবার ক্রেতা- দর্শণার্থীর উপস্থিতি ও বিক্রির পরিমাণ দুটোই বেশ সন্তোষজনক। এরই মধ্যে মেলায় ক্রেতাদের নজর কেড়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির তিনটি নতুন মডেলের (৫২৬ লিটার, ৫১২ লিটার ও ৪৩০ লিটার) রেফ্রিজারেটর ও দুটি নতুন মডেলের ডিপ ফ্রিজ, এন্ড্রয়েড স্মার্ট মডেলের নতুন তিনটি (৪৩ ইঞ্চি, ৪৯ ইঞ্চি ও ৫৫ ইঞ্চি) এলইডি টেলিভিশন, রুটি মেকার, ডোনাট মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, কেক মেকার, ট্রাভেল ব্লেন্ডার, ইলেকট্রিক্যাল স্যুইচ, সকেট ও সিলড লেড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি। বিশেষ করে, রপ্তানির জন্য তৈরি করা ৩ দরজার ৫২৬ লিটারের নো- ফ্রস্ট ফ্রিজটি দৃষ্টি কেড়েছে ক্রেতাদের।
স্মার্ট ফোন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ওয়ালটন নতুন নিয়ে এসেছে প্রিমো এনএক্স-৩, প্রিমো আর-৪, প্রিমো ভি-২, প্রিমো জেডএক্স-২, প্রিমো ডি-৭। যার মধ্যে ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে ৩৫,৯৯০ টাকা মূল্যের প্রিমো জেডএক্স-২। যাতে রয়েছে দুই গিগাহার্জ প্রসেসর, ৩-গিগাবাইট র্যাম, ৬৪ গিগাবাইট রোম, উচ্চমানের ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফিসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। তিন হাজার ৬৯০ টাকা থেকে ১৬ হাজার ৪৯০ টাকার মধ্যে মিলছে অন্যান্য স্মার্ট ফোন। নতুন বছরের উপহারস্বরূপ ওয়ালটন এলইডি টিভিতে মডেলভেদে ১ হাজার ৫০০ টাকা ৫ হাজার টাকাপর্যন্ত দাম কমানো হয়েছে। এছাড়াও মেলাতে ওয়ালটনের ২৪, ২৮ ও ৩২ ইঞ্চির এলইডি টিভিতে সর্বোচ্চ সাত (৭) শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ক্যাশ ডিসকাউন্ট দেয়া হচ্ছে।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ আকরামুজ্জামান অপু জানান, এবারের মেলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি আকর্ষণীয় ডিজাইন ও মডেলের সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য প্রদর্শণ করছে ওয়ালটন। মেলায় আসা প্রায় সবশ্রেনীর মানুষ অন্তত একবার হলেও ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে আসছেন। ফলে এখানে ভিড় সবচেয়ে বেশি। ক্রেতারা যাতে একজায়গাতেই তাদের দরকারি সব ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য পান সেজন্যই সর্বোচ্চ সংখ্যক পণ্য নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। তাছাড়া ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের সামনে শূণ্যে ভাসমান মানব চরিত্রটি দেখার জন্য প্রচুর দর্শক আসছেন। বাণিজ্য মেলায় হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সের জন্য আলাদা স্টল রয়েছে ওয়ালটনের। মেলার দক্ষিণ পাশে ৩১ এ এবং ৩১ বি নম্বর স্টলে প্রদর্শণ ও
বিক্রি করা হচ্ছে ওয়ালটনের বিভিন্ন মডেলের হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য রাইস কুকার, মাল্টিকারী কুকার, ওয়াটার ডিস্পেনসার, ওয়াটার পিউরিফায়ার, ইন্ডাকশন কুকার, ওভেন, প্রেসার কুকার, ভেজিটেবল মেকার, ফুড প্রসেসর, ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক, এয়ার ফ্রায়ার, হেয়ার ড্রায়ার, ব্লেন্ডার, মাল্টি কুকার, ক্লথ ড্রায়ার, সেলাই মেশিন, এয়ার কুলার, গ্যাস স্টোভ, ওয়াশিং মেশিন, রুম হিটার, মপসেটসহ অসংখ্য প্রযুক্তি পণ্য।