জনবিচ্ছিন্ন না করতে পেরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৮-১৬ ২১:২৯:৫৭
বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে, সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। তবে কারা পাশে ছিল, ক্ষেত্র তৈরি করেছে, সবই জানি। ধীরে ধীরে সব বেরও হবে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
ইতিহাসের নানা বাঁক তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি তিনি দেশে এলেন। বাহাত্তর সাল থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি হলো। জাসদ সৃষ্টি হলো। একটা চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরানোর। সেই চেষ্টা করে যখন সফল হয়নি তখন তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটালো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে খুনিদের বিচার হয়েছে। যারা কয়েকজন পলাতক তাদের মধ্যে ডালিম পাকিস্তানে আছে তখন থেকে। রশিদ পাকিস্তান-লিবিয়াতে থাকে। মাঝে মাঝে ডালিম কেনিয়াতেও যায়। সে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়েই চলে। মোসলেউদ্দিনের খোঁজ মাঝে মধ্যে পাওয়া যায়, মাঝে মধ্যে পাওয়া যায় না। এ অবস্থার মধ্যে আছে।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সরকারকে বহুবার বলা হয়েছে। তারা কখনও দেয়ও না, স্বীকারও করে না।’
বঙ্গবন্ধুর যে ১২ খুনির ফাঁসির আদেশ হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি খুনি সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
গত বছরের ১২ এপ্রিল আরেক খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আবদুল মাজেদকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আরেক খুনি আজিজ পাশা।
বাকি খুনিদের মধ্যে নুর চৌধুরী কানাডায় আর রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে চলছে আলোচনা।
বাকি তিন খুনি শরিফুল হক ডালিম ওরফে মেজর ডালিম, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আব্দুর রশীদ ও রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেম উদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য এবারই প্রথম প্রকাশ করা হলো সরকারের পক্ষ থেকে।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বঙ্গবন্ধুর দুই খুনিকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নুরকে কানাডা থেকে ডিপোর্ট করার কথা ছিল। সে সময় কানাডিয়ান হাইকমিশনার যে ছিল, সে ছিল মোশতাকের (খোন্দকার মোশতাক আহমেদ) দ্বিতীয় স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলে রফিক। সে কিন্তু রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার যে তা দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, তা করে নাই। ওখানে আমাদের প্রবাসীরা ও আমরাও চেষ্টা চালাচ্ছি তাকে আবার ফেরানো যায় কি না।’
বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রান্তে আলোচনায় অংশ নেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
এএ