মাগুরার কৃষক পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ কারণে অন্য ফসলের পাশাপাশি পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা। এ বছর সদর উপজেলায় ৪৯৮ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। যা থেকে (সবজি হিসেবে) প্রায় ৭০-৮০ হাজার মেট্রিক টন পেঁপে উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার মীরপাড়ার কৃষক রতন মীর জানান, লাভজনক হওয়ায় তিনি পেঁপে চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন। প্রথমবার চারা লাগানোসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় প্রতিবিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩০-৩৫ হাজার টাকা। এরই মধ্যে নতুন লাগানো ক্ষেত থেকে পেঁপে বিক্রি শুরু করেছেন।
তিনি জানান, বর্তমানে প্রতিমণ পেঁপে ৩শ টাকা দরে বিক্রি করছেন। ২০ দিন পরপর প্রায় ৪শ মণ পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নতুন লাগানো ক্ষেত থেকে ৬-৮ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।
কৃষক সুমন মীর জানান, পেঁপে লাভজনক ফসল। তিনি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন। চলতি বছরে এ ক্ষেত থেকে প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষেত নষ্ট না হলে আগামীতে আরও লাভবান হবেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পেঁপে গাছকে বিভিন্ন রোগ (গাছের গোড়া পঁচা, পোকাবাহিত রোগ, ক্ষতিকারক ভাইরাস) থেকে মুক্ত রাখতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে গাছের খাদ্যের অভাব মেটাতে বোরোন প্রয়োগ করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া পেঁপের পরাগায়নসহ ভালো ফলন পাওয়ার জন্য কৃষকদের বিঘাপ্রতি ২টি পুরুষ গাছ রাখার কথা বলা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে জেলায় স্থানীয় জাতের পেঁপের পাশাপাশি বারি জাতের শাহিরাচি, কাশিমপুরী, হানিডিউ, পুশাজাজেন্টসহ বিভিন্ন জাতের পেঁপে চাষ করেছেন কৃষকরা। তারা এসব জাতের পেঁপে ক্ষেত থেকে যাতে ভালো ফলন পেতে পারেন, তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জমিতে একবার চারা লাগালে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রথম বছরের পর পরের দুই বছর ক্ষেত পরিচর্যার খরচ খুবই কম লাগে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও কৃষকরা পেঁপে চাষে ব্যাপকভাবে লাভবান হবেন।’
সানবিডি/ এন/আই