দীর্ঘদিন ধরে চলা পুঁজিবাজারের ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) আবেদনের কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে অনুমোদন পাওয়া প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন থেকেই এটি বাতিল হচ্ছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত ১০ বছর ধরে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। প্রতিবছরই অর্থমন্ত্রনালয় থেকে আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কোটা রাখার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। তবে সময় বাড়ানোর জন্য সব সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পক্ষ থেকে আবেদন করা হতো। কিন্তু এ বছর ক্ষতিগ্রস্তদের আইপিও কোটার মেয়াদ শেষ হলেও সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেনি বিএসইসি। ফলে আইপিও থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা করে ক্ষতিগ্রস্ত কোটার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ তদারকি আহ্বায়ক ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ২০১০ সাল থেকে আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা ছিলো। এর মেয়াদ গত জুন,২০২১ তারিখে শেষ হয়ে গেছে। কোটার মেয়াদ বাড়ানোর বিষযে মন্ত্রনালয় থেকে কোন চিঠি আমরা পাইনি। যেহেতু কোন চিঠি আসেনি তাই এর মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: রেজাউল করিম বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের কোটার সময় বাড়ানোর বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি। ফলে জুলাই মাসের পর থেকে অনুমতিপত্র পাওয়া কোম্পানিগুলোতে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা কিছু থাকছে না। তবে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ যা ছিলো, সেগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে চলে যাবে। এতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বরাদ্দ আগের তুলনায় বাড়ছে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের আন্দোলনের মুখে পুঁজিবাজারের বড় ধরনের সংস্কার করে সরকার। এর মধ্যে ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। প্রণোদনার অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস অর্থাৎ ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এরপর থেকে পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে প্রতিবছরই এর মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় অর্থমন্ত্রণালয়। সেই ধারাবাহিকতায় ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কোটার মেয়াদ শেষ হয়েছে।