গাজীপুরে ঝুটের গুদামের মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে অর্ধশতাধিক গুদামসহ বিপুল পরিমাণ ঝুট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে অন্তত ১০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। চোখের সামনে কোটি কোটি টাকার মাল পুড়ে যেতে থাকলেও দাঁড়িয়ে দেখা আর আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার ছিল না ঝুটের গুদামের মালিকদের। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে প্রায় চার ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পুবাইলের মাজুখান এলাকায় একটি একতা ঝুট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মার্কেটের একটি গুদামে রোববার সকাল ১০টার দিকে এ আগুনের সূত্রাপাত হয়।
গুদামে থাকা এ্যাথরেটিক ও পলেস্টার জাতীয় ঝুট কাপড় থাকায় মুহূর্তেই আগুন পাশের গুদামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করে। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়। আগুনের কালো ধোঁয়ায় আশপাশ এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথমে টঙ্গী স্টেশনের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের আরো দু’টি ইউনিট, সদর দফতর ও গাজীপুর থেকে আরো দু’টি ইউনিট এসে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে বিকেল পর্যন্ত ড্যাম্পিংয়ের কাজ করছিল তারা। আর আগুন নেভানোর আগেই গুদামের সব ঝুট পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে মালিকদের দাবি।
একতা ঝুট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মার্কেটের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু বলেন, আগুনের ভয়াবহতা দেখে হতবাক হয়ে যান ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা। আগুনে তার নিজেরসহ অন্তত ৬০টির মতো ঝুটের গুদাম পুড়ে গেছে। গুদামগুলোতে ঝুট থেকে তৈরী তুলা, বিভিন্ন রঙের ঝুট, ববিন, সুতা ও কাপড়সহ বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানার পরিত্যক্ত মালামাল গুদামজাত করে রাখা ছিল। চোখের সামনে কোটি কোটি টাকার এসব মালামাল পুড়ে গেছে। শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে দেখা আর আফসোস করা ছাড়া গুদাম মালিকদের কিছুই করার ছিল না।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনার বেশ কিছুদিন আগেও একই স্থানে আগুন লেগে ছিল। বারের আগুন এখানকার ব্যবসায়ীদের একেবারে পথে বসিয়ে দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো: আব্দুল হালিম জানান, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিটের কর্মীরা ১৯টি হোস বিভিন্ন জায়গা দিয়ে খুলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। গুদামগুলোতে থাকা এ্যাথরেটিক ও পলেস্টার জাতীয় ঝুট কাপড়ের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এসব মালামালের কারণে আগুনে পানি দেয়ার সাথে সাথে আবারো তা জ্বলে উঠে। এখানে যে ঘরগুলো তৈরী হয়েছে সেগুলো অপরিকল্পিত। এ ধরনের ব্যবসা করতে হলে সেখানে আগুন নেভানোর যেসব সরঞ্জামাদি থাকা প্রয়োজন তা ছিল না। শেডগুলো একীভূত হওয়ার কারণে কতগুলো ঘর পুড়েছে তা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এএ