গত এক বছরে দেশের শেয়ার বাজার আপট্রেন্ডে রয়েছে। প্রতিনিয়ত মার্কেট সূচক বাড়ছে, তালিকাভূক্ত অধিকাংশ কোম্পানী শেয়ারের দাম বাড়ছে ও ডিএসই’তে প্রতিদিনের গড় লেনদেন হচ্ছে দুই হাজার কোটি টাকার উর্ধ্বে । এতে করে রেগুলেটরী সংস্থা থেকে শুরু করে শেয়ার বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই খুশী। সাধারন বিনিয়োগকারীরা বছরখানেক আগে বাজার মন্দার সময় যেরকম হা-হুতাশ, এমনকি রাস্তায় বিক্ষোভ পর্যন্ত করতো এখন তা একেবারেই নেই। এ অবস্থা নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। তবে যেটা অস্বস্তির তা হলো এ অবস্থা কতদিন টিকবে সেটা নিয়ে অনেকেরই সংশয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজার যে গতিতে বেড়ে চলেছে এবং বিশেষতঃ দূর্বল জাংক শেয়ারের দামও যে হারে বেড়ে যাচ্ছে তা তো দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হতে পারে না। প্রাকৃতিক নিয়মেই কোন জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লে তার পতনও হয় অস্বাভাবিকভাবে।
টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর প্রাসংগিকতাঃ গত বছরে যখন শেয়ার মার্কেটে দাম বাড়তে শুরু করেছিল তখন অধিকাংশ কোম্পানীর শেয়ার প্রাইস অনেকটাই নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় ছিল। কিন্ত বর্তমানে ডিএসই’র ওভারঅল প্রাইস-আর্ণিংস (পি-ই) রেশিও ২০ এর কাছাকাছি চলে গেছে। অনেক কোম্পানীর নিজস্ব পি-ই রেশিও ২০০ এর উপরে উঠে গেছে, যেটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদেরকে নিজ স্বার্থে অধিকতর সতর্কতার সাথে ট্রেড করার কোন বিকল্প নেই। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে সেরুপ সতর্কতার মানে কি এবং কি কি দেখে সাধারন বিনিয়োগকারীগণ শেয়ার বাই সেল করতে পারেন। সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে কোন শেয়ারে এন্ট্রি দেয়ার পূর্বে কোম্পানীর ফান্ডামেন্টালস ন্যুনতম গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে আছে কিনা তা অবশ্যই দেখতে হবে- অন্তত যারা মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদের জন্য শেয়ার কিনছেন।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসে অনেক বিষয় জড়িত থাকে, যা সাধারন বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না। সেটা না হলেও অন্তত কোম্পানীর পি-ই রেশিও যেন মার্কেট পি-ই রেশিও’র ধারে কাছে থাকে সেটা খেয়াল করা উচিত। গ্রহণযোগ্য পি-ই রেশিও দেখে কোন কোম্পানীর শেয়ার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তা কিনতে হবে সঠিক প্রাইসে। অধিকাংশ শেয়ায়ের দাম প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়- এমনকি একই দিনে তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দামের মধ্যে বেশ ফারাক লক্ষ্য করা যায়। দেখা যায় অনেক কোম্পানীর দাম কয়েকদিন ক্রমাগতভাবে বাড়ার পর তা কমতে থাকে। যদি প্রাইস বৃদ্ধি শুরু হওয়ার পর দেরী না করে সেটা ক্রয় করা যায় এবং তারপর প্রাইস কয়েকদিন বৃদ্ধির পর আবার যখন কমতে শুরু করেছে তখন বিক্রি করা সম্ভব হয় তবে ট্রেডিং করেই মুনাফা ঘরে তোলা যেতে পারে। খালি চোঁখে অনুমান করে সঠিক প্রাইসে বাই ও উপযুক্ত সময়ে সেল করার পথে বড় বাঁধা নিজের আবেগ। সে আবেগ থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করতে পারে টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর। সেসব ইন্ডিকেটর চার্টের মাধ্যমে বাই- সেল সিগন্যাল দিয়ে থাকে। সব সময় যে সম্পূর্ণ সঠিক সিগন্যাল দেয় তা বলা যাবে না।
অবশ্য ঠিকমত ব্যবহার করতে জানলে সেসব দিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাই সেল সম্পর্কে সঠিক সিগন্যাল পাওয়া যায়। তবে টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহারের বড় সমস্যা হলো শত শত ইন্ডিকেটরের ছড়াছড়ি এবং বিনিয়োগকারীদের পক্ষে তা সঠিকভাবে বুঝা ও প্রয়োগের অক্ষমতা। অনেক ইন্ডিকেটর সঠিক সিগন্যালের পাশাপাশি প্রায়শঃ ভূল সিগন্যাল দিয়ে থাকে। তাছাড়া, সব টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর সমানভাবে কার্যকর নহে। তাই গ্রহণযোগ্য ও সময়ের ধারায় পরীক্ষিত টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটরকেই বেঁছে নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
মোট কথা ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করে ট্রেডার ঠিক করবেন তিনি কোন্ কোম্পানীর শেয়ার কিনবেন, আর টেকনিক্যাল এনালাইসিসের ভিত্তিতে ঠিক করবেন কখন কোন্ প্রাইসে তা বাই সেল করবেন।
টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর কি করেঃ কোম্পানী বা সংশ্লিষ্ট সেক্টরের আর্থিক অবস্থার প্রতি কোন প্রকার ভ্রূক্ষেপ না করে টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর শুধুমাত্র বিগত সময়ে তার শেয়ার প্রাইস এবং ভ্লিউম (শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ) চার্টে বসিয়ে নানাবিধ ক্রাইটেরিয়ার সাহায্যে ট্রেন্ড বা প্রাইসের দিক ও গতিধারা বিশ্লেষণ করে থাকে। আগামী পিরিয়ডে দাম কি হবে তা অনেকটাই নিকট অতীতের দামের ট্রেন্ড বা ধারা কিরুপ ছিল তার উপর নির্ভর করে। তাই টেকনিক্যাল এনালাইসিস দ্বারা অন্তত স্বল্প মেয়াদের সম্ভাব্য দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আগের দিনে ট্রেডাররা প্রতি ঘন্টা ও দিনের প্রাইস খাতায় লিখে রেখে পরবর্তীতে তা দিয়ে চার্ট তৈরী করতেন এবং তার সাহায্যে প্রাইস প্যাটার্ণ বের করতেন। কিন্ত বর্তমানে কম্পিউটার প্রযুক্তির চরম বিকাশের ফলে যে কোন শেয়ারের যে কোন সময়ের চার্ট মূহুর্তেই তৈরী করা যায়। এমনকি ১ মিনিটের প্রাইস নিয়ে চার্ট করাও কোন কঠিন বিষয় নয়।
শত শত টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর থাকলেও MACD, Moving Average, RSI, Bollinger Band, Candlestick Pattern, On Balance Volume, Money Flow Index এবং Ichimuko Cloud অধিকতর জনপ্রিয়। বাংলাদেশে যারা টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর নিয়ে কাজ করেন তাঁদেরকেও শেয়ার মার্কেট এনালাইসিসে মূলত সেসব ইন্ডিকেটর ব্যবহার করতে দেখা যায়। সেসবের মধ্যে কোন্ ইন্ডিকেটর কেমন কাজ করে, কোন অবস্থায় তা ভাল কাজ করে, এবং তাদের ক্যালকুলেশন কিভাবে করা হয় সেসব সাধারন বিনিয়োগকারীদের পক্ষে জানা একটি চ্যালেঞ্জই বটে। তদসত্বেও বলা যায় যে একটু চেষ্টা করলে সবাই সেসব ইন্ডিকেটর থেকে বেছে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু একটি সম্পর্কে অন্তত কাজ চালানোর মত প্রাথমিক ধারণা লাভ করতে পারেন। তারপর বর্তমান কম্পিউটার প্রযুক্তির কল্যাণে বিনা খরচে বা অতি স্বল্প মূল্যে নানাবিধ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শেয়ার বাই সেল এর সিগন্যাল বের করতে পারেন। গুগলে সেসব ইন্ডিকেটর লিখে সার্চ করলেও সেসবের মানে কি, কিভাবে ক্যাল্কুলেশন করা হয়, কতটুকু কাজ করে সে সম্পর্কে নানা তথ্য চলে আসবে। প্রয়োজনে বাংলা ভাষায় টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর নিয়ে যেসব বই বাজারে কিনতে পাওয়া যায় তার সাহায্য নেয়া যায়।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসে যা দেখা হয়ঃ শুধুমাত্র বিগত সময়ে (মিনিট, ঘন্টা, দিন, মাস, বছর, ইত্যাদি) কোম্পানীর প্রাইস ট্রেন্ড এবং কিছুক্ষেত্রে ট্রেড ভ্লিউম কিরুপ ছিল তা দেখা হয়। এখানে অতীতের লাভ-লস, আর্থিক ভিত্তি, ম্যানেজমেন্টের অবস্থা, ডিভিডেন্ডের তথ্য -কোন কিছুই বিবেচ্য নয়। কারণ টেকনিক্যাল এনালিষ্টরা বিশ্বাস করে যে কোম্পানীর আর্থিক অবস্থানের চিত্র, এমনকি প্রাইসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন সকল ইনফরমেশন শেয়ার প্রাইসে ইতিমধ্যেই প্রতিফলিত হয়ে গেছে। তাই প্রাইসের ট্রেন্ড দেখেই শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে তাঁরা মনে করেন। সে ট্রেন্ড বুঝতে প্রাইস চার্টের সাথে নানা রকম ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে কম্পিউটার প্রযুক্তির বিকাশের ফলে রিয়েল টাইম প্রাইসের ভিত্তিতে আকর্ষনীয় রংয়ে ও নানাবিধ টাইম-ফ্রেমে যে কোন কোম্পানীর চার্ট মূহুর্তেই তৈরী করা সম্ভব যার উপর নির্ভর করে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
সাপোর্ট ও রেজিষ্ট্যান্সঃ টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করতে হলে চার্টে সাপোর্ট ও রেজিষ্ট্যান্স কোন্ প্রাইসে রয়েছে তা জানা অত্যাবশ্যক। সাপোর্ট হলো সেই প্রাইস বা প্রাইস রেঞ্জ যেখানে নামতে নামতে একসময় প্রাইস থমকে দাঁড়ায় এবং প্রায়শঃ আর নীচে না নেমে সেখান থেকে উপরে উঠতে শুরু করে। আর রেজিষ্ট্যান্স হলো বৃদ্ধি হতে হতে যেখানে এসে প্রাইস থমকে দাঁড়ায় এবং প্রায়শঃ আবার নীচে নেমে যায়। এরুপ অবস্থার ব্যতয় ঘটলে তাকে প্রাইস ব্রেক-আউট বলা হয়। টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর মোতাবেক সাপোর্ট রেঞ্জে শেয়ার কিনতে হবে আর রেজিষ্ট্যান্স রেঞ্জে বিক্রি করতে হবে। সমস্যা হলো যে ট্রেডিশনাল ইন্ডিকেটরগুলোতে কোন্ প্রাইসকে সাপোর্ট এবং কোন্ প্রাইসকে রেজিষ্ট্যান্স ধরা যাবে তা অনেকটাই সাবজেটিভ অর্থাৎ তা ট্রেডারের নিজস্ব জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মানসিকতার উপর নির্ভর করে। ফলে একজন যাকে সাপোর্ট প্রাইস মনে করছে অন্যজনের চোখে তা সাপোর্ট নয়। সেক্ষেত্রে অনেকটা ব্যতিক্রম হচ্ছে ইচিমুকো ক্লাউড (Ichimuko Cloud) নামক ইন্ডিকেটর।
এ ইন্ডিকেটর ব্যবহার কর চার্টে যেসব রেখা আসবে তার কোন একটিকে ট্রেডার তাঁর নিজ অভিরুচির ভিত্তিতে সাপোর্ট বা রেজিষ্ট্যান্স হিসাবে বেঁছে নেয়ার সুযোগ পান। ইচিমুকো ক্লাউড স্ট্র্যাটেজীতে যে দুটো রেখার সাহায্যে ক্লাউড তৈরী হয় তার বাউন্ডারীকে (১ম লিডিং লাইন এবং ২য় লিডিং লাইন, অর্থাৎ Senku Span A ও Senku Span B ) সাপোর্ট-রেজিষ্ট্যান্স হিসাবে ধরা যায়। আবার যারা ইচিমুকো ক্লাউড এর সাহায্যে স্বল্পমেয়াদে ট্রেড করবেন তাঁরা জাপানী ভাষায় Kijun Sen (KS)’কে (যাকে ইংরেজীতে Base Line বলা হয়) আপট্রেন্ডের সময় সাপোর্ট এবং ডাউনট্রেন্ডের সময় রেজিষ্ট্যান্স হিসাবে বেঁছে নিতে পারেন। আর যারা খুবই স্বল্পমেয়াদে ট্রেড করেন এবং খুব কম ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন তাঁরা Tenken Sen (TS) বা ইংরেজীর Conversion Line কে আপট্রেন্ডের সময় সাপোর্ট এবং ডাউনট্রেন্ডের সময় রেজিষ্ট্যান্স হিসাবে বেঁছে নিতে পারেন।
নীচে্র চিত্রে ইচিমুকো ক্লাউডে ডিএসই’র ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর এর সাপ্তাহিক প্রাইস চার্টে সাপোর্ট ও রেজিষ্ট্যান্স কেমন হয় তা দেখা যেতে পারে।
উপরের চিত্রে ক্যান্ডলস্টিক প্রাইস চার্টের সাথে ইচিমুকো ক্লাউড স্ট্র্যাটেজীর সংশ্লিষ্ট কয়েকটি রেখার আকার আকৃতি দেখানো হয়েছে। সেখানে হলুদ রংয়ের রেখা দ্বারা চিংকু স্প্যান বা CS (যেটা বর্তমান সপ্তাহের ক্লোজিং প্রাইসকে ২৬ সপ্তাহ পূর্বের প্রাইসের উপরে বসানো হয়েছে), প্রাইসের সবচেয়ে বেশী গাঁ ঘেষে চলা কাল রংয়ের রেখা দ্বারা ট্যাংকেন সেন বা TS (যেটা এখানে বিগত ৯ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন প্রাইসের গড়), বেশীরভাগ সময়ে TS এর নীচ দিয়ে চলে যাওয়া লাল রংয়ের রেখা দ্বারা কিজুন সেন বা KS (যেটা এখানে বিগত ২৬ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন প্রাইসের গড়), ক্লাউড সবুজ রঙ থাকার সময় তার উপরের সীমানা দিয়ে বয়ে চলা নীল রংয়ের সেংক্যু স্প্যান A বা SSA (যেটা এখানে বিগত ২৬ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন প্রাইসের গড়, যা এখনকার প্রাইস লেভেল থেকে ২৬ সপ্তাহ পরে বসানো অর্থাৎ time shifted forward করা হয়েছে) এবং ক্লাউড লাল রঙ থাকার সময় তার উপরের সীমানা দিয়ে বয়ে চলা খয়েরী রংয়ের সেংক্যু স্প্যান B বা SSB (যেটা এখানে বিগত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন প্রাইসের গড়, যা এখনকার প্রাইস লেভেল থেকে ২৬ সপ্তাহ পরে বসানো হয়েছে)।
SSA এর মান SSB এর মান থেকে বেশী হলে ক্লাউড সবুজ হয় এবং তার বিপরীত হলে ক্লাউড লাল রংয়ের হয়। সামনের ক্লাউডের রং সবুজ হলে মার্কেট বুলিশ বা আপট্রেন্ড ইংগিত করে এবং লাল হলে ডাউন্ট্রেন্ড বা বিয়ারিশ ইংগিত করে। প্রাইস যখন TS, KS এবং ক্লাউডের উপরে অবস্থান করে তখন সেটা বুলিশ বুঝায়, যেটা চিত্রে ফার্মা সেক্টরের জন্য দেখা যাচ্ছে। এখন থেকে প্রাইস যদি কমে TS কে ধরে ফেলে বা তার নীচে নেমে যায় তবে ট্রেডার সতর্ক হবেন। আর যারা মোটেই ঝুঁকি নিতে চান না তাঁরা প্রাইস TS রেখা্র নীচে আসার পরপরই শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারেন, কারণ TS রেখা হচ্ছে তাঁদের জন্য সাপোর্ট লাইন যা ব্রেক আউট হলে তাঁরা এক্সিট করে থাকেন প্রাইস আরো নেমে যাওয়ার ভয় থেকে রক্ষা পেতে। তবে বেশীরভাগ ট্রেডার TS কে সাপোর্ট না ধরে KS কে সাপোর্ট লাইন বিবেচনা করে থাকেন। কারণ প্রাইসের স্বাভাবিক উঠানামাতেই তা TS কে অনেক সময় স্পর্শ করে ফেলতে পারে; আর KS কে স্পর্শ করতে প্রাইস বেশ কিছুটা কমার দরকার পড়ে। চিত্রে ফার্মা সেক্টরে প্রাইস বর্তমানে TS কিংবা KS এর সাপোর্ট লেভেল থেকে উপরে রয়েছে যা বাই সিগন্যাল নির্দেশ করছে।
ইচিমুকো ক্লাউডে সুনির্দিষ্ট সাপোর্ট ও রেজিষ্ট্যান্স লাইন পাওয়া ছাড়াও বেশ কয়েকটা উপায়ে অনেকটা নির্ভরযোগ্য বাই ও সেল সিগন্যাল পাওয়া যায়। অন্যান্য টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটরের তুলনায় এখানে ভূল সিগন্যালের পরিমাণ নগণ্য। তাছাড়া, ইচিমুকো স্ট্র্যাটেজী্কে MACD বা RSI এর মত টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর সমন্বয়ে ব্যবহার করা হলে বাই সেল সিগন্যালের কার্যকারীতা আরো বেড়ে যায়। সেসব বিষয়ে বিস্তারিভাবে জানতে লেখকের রচিত “মেঘের আড়ালে সূর্য্যঃ ইচিমুকো ক্লাউডে শেয়ার ট্রেডিং” শীর্ষক বইটি পড়া যেতে পারে।
শফিকুল ইসলাম
অতিরিক্ত সচিব (অবঃ)
এএ