চলতি মৌসুমে মাগুরা জেলায় ক্ষিরার ভালো ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে এ অঞ্চলের কৃষকদের মুখে।
প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এ অঞ্চলের উৎপাদিত শত শত টন ক্ষিরা বেচা-কেনা। মাগুরার চার উপজেলার উৎপাদিত ক্ষিরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর মাগুরার শ্রীপুর, সদর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ক্ষিরা চাষ করা হয়েছে। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকার পাশাপাশি বীজ, সার এবং কীটনাশক সুলভমূল্যে পাওয়ায় ক্ষিরার বাম্পার ফলন হয়েছে।
সদর উপজেলার কৃষক আহাদ বিশ্বাস বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ক্ষিরা চাষ করতে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত ক্ষিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। ক্ষিরা আবাদে পোকামাকড়ের ঝামেলা কম হওয়ায় অনেকটা নিশ্চিন্তেই এটি চাষ করা যায়। এ কারণে ক্ষিরা চাষে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন আরও বাড়ছে।
একই গ্রামে ক্ষিরা চাষি মোকলেছুর রহমান বলেন, এখানকার উৎপাদিত ক্ষিরা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। মাগুরার ক্ষিরা কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মহাজনরা ছুটে আসেন।
মাগুরা পাইকারি বাজারের আড়তদার লেন্টু শেখ বলেন, অনেক সময় হাটে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষিরা আমদানি হয়। তখন ওজনের পরিবর্তে বস্তা চুক্তিতে বিক্রি হয়। প্রকারভেদে প্রতি বস্তা (ছোট) ক্ষিরা বিক্রি হয় ৩০০-৩৫০ এবং বড় বস্তা ক্ষিরা বিক্রি হয় সাড়ে ৬০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত।
ক্ষিরা চাষি মো. রায়হান আলী বলেন, তার প্রতি বিঘা জমিতে ক্ষিরার আবাদ করতে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন প্রতি বিঘা জমির ক্ষিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
ক্ষিরা ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন শেখ ও রফিকুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের উৎপাদিত ক্ষিরার মান ভালো ও তুলনামূলক দামও কম। ক্ষিরার মান ভালো হওয়ায় এর কদর রয়েছে সারাদেশে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, জেলায় এ বছর ৬৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষিরা চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষিরার সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে সদর উপজেলায়। এ বছর ক্ষিরা চাষে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। ক্ষিরা চাষে অল্প সময়ে এবং স্বল্প বিনিয়োগেই অধিক লাভ করা যায়।
কৃষকরা বিঘাপ্রতি খরচ বাদে ২৫-৩০ হাজার টাকা করে লাভ করছেন। আগামীতে ক্ষিরা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
সানবিডি/ এন/আই