জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার বিকেলে ভাটারা থানা পুলিশ তাকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে উপস্থাপন করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের এক মামলায় আসামি হিসেবে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।
শুনানি শেষে আদালত তাকে চার দিনের রিমান্ড দেন। এ সময় মাওলানা শামসুল ইসলামের সাথে আটক তার বাবুর্চি ইমাম হোসেনকেও চার দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে ভাটারা থানায় তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় অনেককে। ওই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মাওলানা শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক কাজী জুনায়েদ আলী মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অপর পক্ষে মাওলানা শামসুল ইসলামের জামিন আবেদন করেন শামসুল ইসলামের আইনজীবীরা।
শুনানিতে অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাওলানা শামসুল ইসলাম একজন সাবেক আইন প্রণেতা। তিনি জনগনের ভোটে নির্বাচিত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি এ মামলার আসামি নন। তাছাড়া যে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সেক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। এজন্য এ মামলা চলতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, মাওলানা শামসুল ইসলাম একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ। তিনি খুবই অসুস্থ। হৃদরোগে আক্রান্ত। তিনি এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। শুনানি শেষে আদালত মাওলানা শামসুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা প্রসঙ্গে পরে মাওলানা শামসুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১টায় সাদা পোশাকের পুলিশ তার উত্তরার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে উপস্থাপনের নিয়ম থাকলেও দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টা পরে আজ বিকেল ৪টায় তাকে আদালতে আনা হয়েছে।
গতকাল সারাদিন তার আইনজীবীরা আদালতে অপেক্ষা করলেও তাকে আনা হয়নি।
তিনি বলেন, তাকে সন্ত্রাসী বিরোধী আইনের মামলায় সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে। তিনি একজন সাবেক আইন প্রণেতা। তার বিরুদ্ধে এ মামলা খুবই হাস্যকর।
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ আরো বলেন, মাওলানা শামসুল ইসলাম একজন হৃদরোগী। তিনি বয়সজনিত নানা রোগে খুবই অসুস্থ। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করায় আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার দ্রত মুক্তি দাবি করছি।
তিনি বলেন, আমরা এ রিমান্ডের বিরুদ্ধে পিটিশন করবো। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব। আশা করি সেখানে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
মাওলানা শামসুল ইসলামের আইনজীবী হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান আজাদ, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট রোকন রেজা, অ্যাডভোকেট আমানুল করিম লিটন প্রমুখ।
এএ