করোনা মহামারির কারণে গত দু’বছর সবকিছুই ওলটপালট হয়ে গেছে। দেশের বাজারে বছরের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি হয় অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে। এসময় অনুষ্ঠিত হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে উৎসব দুর্গাপূজা। কৃষকের ঘরে ওঠে নতুন ধান। পাশাপাশি পড়ে বিয়ের ধুম। তাই এই তিন মাসের অপেক্ষায় থাকেন অলঙ্কার ব্যবসায়ীরা।
মহামারিতে জনজীবন ও অর্থনীতিতে নেমে এসেছে দুর্যোগ। কাজ হারিয়েছেন অনেকে। ঘরবন্দি সময় কাটাতে হয়েছে মাসের পর মাস। ফলে গত দু’বছরে উৎসব উদযাপন ভুলে গেছেন অনেকে। যার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ও। ঈদ, পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূজা, নবান্ন- একের পর একটি উৎসব চলে গেছে। কিন্তু স্বর্ণ ব্যবসার মন্দা কাটেনি।
তবে বর্তমানে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় আসন্ন পূজা-বিয়ে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
এ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রেতা আকৃষ্ট করতে গত ঈদের সময় নানা ছাড় দিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি। স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।
তারা বলছেন, জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় এখন পূজা উপলক্ষে কিছু অলঙ্কার বিক্রি হচ্ছে। সামনে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পূজা শুরু হবে, তাই আশা করা যায় পূজা উপলক্ষে আরও কিছু ব্যবসা হবে। তাছাড়া নভেম্বর-ডিসেম্বরে নবান্ন ও বিয়ের মৌসুম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আশা করা যায় আগামী দুই-তিন মাস ভালো ব্যবসা হবে।
অন্যদিকে, দেশের বাজারে মন্দাভাব থাকলেও করোনার মধ্যে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ছিল উত্তাপ। হঠাৎ বড় উত্থান-পতনের ঘটনা ঘটতে থাকে একের পর এক। ফলে দেশের বাজারেও বারবার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়। সবশেষ গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ভরিতে ১ হাজার ৫১৬ টাকা বাড়িয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৭৩ হাজার ৪৮৩ টাকা নির্ধারিত হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৭০ হাজার ৩৩৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৬১ হাজার ৫৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫১ হাজার ২৬৩ টাকা নির্ধারিত হয়। এ দামেই বর্তমানে বাংলাদেশে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাজুস সভাপতি এনামুল হক বলেন, করোনার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন মানুষ অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। এতে পূজা উপলক্ষে কিছু অলঙ্কার বিক্রি হচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি না হলে সামনে বিক্রি কিছুটা বাড়বে বলে আশা করছি। তবে করোনার কারণে যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না।
সানবিডি/ এন/আই