শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, সরকার কৃষিখাতসহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার (২ অক্টোবর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় উৎপাদনশীলতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট খাতের অবদানের ওপর নির্ভরশীল নয়। এর জন্য প্রয়োজন জাতীয় অর্থনীতির সকল খাতের সামগ্রিক অগ্রগতি ও অবদান। উৎপাদনশীলতার সুফল শুধুমাত্র উৎপাদনকারী এককভাবে ভোগ করে না। তার সুফল সরকার, মালিক, শ্রমিক ও ভোক্তাসহ সমাজের সবাই সমানভাবে ভোগ করে।
তিনি বলেন, উৎপাদনশীলতার সুফল ভোগ করতে সমাজের সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং অঙ্গীকার একান্ত প্রয়োজন। আর এই সামগ্রিক অঙ্গীকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার একমাত্র পথ হচ্ছে উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন কর্মসূচিকে জাতীয় আন্দোলনে রূপান্তরিত করা।
উৎপাদনশীলতার স্তরে বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে দ্রুত উত্তরণ করতে হলে দেশের কৃষি, শিল্পকারখানা, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাকেন্দ্র, হাসপাতাল প্রভৃতি জাতীয় অর্থনীতির সকল কর্মকাণ্ডের পদ্ধতিগত ও ধারাবাহিকভাবে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কর্মসূচিকে আরও জোরদার করতে হবে। সবাইকে উৎপাদনশীলতার সুফল সম্পর্কে সচেতন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির আন্দোলনে সবাইকে শামিল করতে হবে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম ইয়াহিয়া, ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) নবনিযুক্ত মহা-পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মেজবাহ-উল-আলম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) পরিচালক এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন) মো. ফয়জুর রহমান ফারুকী স্বাগত বক্তব্য দেন। এতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ২১টি দেশের এনপিও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ ফেসবুকের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।
এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়নে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে উৎপাদনশীলতা উন্নয়নে নীতি, কৌশলের ব্যাপক চর্চা একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে সামঞ্জস্যপূর্ণ টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য উৎপাদনশীলতা উন্নয়নে আধুনিক কলা-কৌশলের ওপর প্রশিক্ষণ, সেমিনার, নতুন নতুন কৌশল, পদ্ধতি উপায়ে উদ্ভাবনী কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রমিক, মালিক ও সরকারকে একত্রে উৎপাদশীলতা কার্যক্রমের সফলতার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের উৎপাদশলীতার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে পৃথিবীর বুকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি।
তিনি আরও বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে। এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সব সেক্টরে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। তাহলে আমরা অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে এনপিও তাদের গুণগত কার্যক্রম পরিচালনাসহ এনপিও মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে দিকনির্দেশনামূলক মাইলফলক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
এএ