রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর হত্যা ঘটনায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সুন্দর সমাধানের প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইউ’র রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে আবদুল হামিদ এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রপতির উপ-প্রেস সচিব মুন্সী জালাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সম্প্রতি সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনা তাদের বিষয়ে সবচেয়ে সুন্দর সমাধানের প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
মুন্সী জালাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ধন্যবাদ জানান।’
এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে স্বতঃস্ফূর্ত, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারকে অব্যাহত চাপ প্রদানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪৮ বছর বয়সী মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি ছিলেন রোহিঙ্গাদের ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ সংগঠনের চেয়ারম্যান।
মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের শ্রেণিতে উত্তরণের পরও বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রদত্ত অগ্রাধিকার সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
উপ-প্রেস সচিব বলেন, ইইউ দূত পরিচয়পত্র দিতে গেলে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের সর্ববৃহৎ গন্তব্য। এছাড়া, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান উৎস। বিগত দিনে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম আস্থাশীল অংশীদারে পরিণত হয়েছে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইইউ দূতের সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
এএ