জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আরও বেশি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে যারা বসবাস করছেন, তাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ঝুঁকিতে থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪০ বছরের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রীষ্মকাল প্রলম্বিত হওয়াসহ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া শীতকালে গরম এবং বর্ষাকাল ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এর ফলে দেশে বিভিন্ন ঋতুর বৈচিত্র্য অস্পষ্ট হচ্ছে। আর আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারেও প্রতিবেদনে বলে ভবিষ্যৎ বাণী করা হয়েছে।
২০১৯ সালে খেয়ালী আবহাওয়ার কারণে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ৭৭ শতাংশই রাজধানী ঢাকায়। ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্যান্য বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় তিনগুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বিরাজ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব পড়ছে। শীতকালে বেশি সংখ্যক মানুষ অবসাদজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বৃদ্ধির ফলে অস্থিরতাজনিত মানসিক রোগ বাড়ছে। মেয়েদের মধ্যে অবসাদ এবং ছেলেদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির শীর্ষ তালিকাভুক্ত দেশগুলোর একটি হলেও এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে সহনশীলতা এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা রোগব্যাধি সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশকে শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এএ