স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি ব্যাংকটির বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিং সিরিজ ২০২১-এ গণমাধ্যমের সাথে আলোচনাকালে এমনই তথ্য তুলে ধরে ব্যাংকটির গ্লোবাল রিসার্চ টিম। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, এমপি। এছাড়াও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-এর প্রায় ৩০০ ক্লায়েন্ট এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর গ্লোবাল হেড অব রিসার্চ অ্যান্ড চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট এরিক রবার্টসন বলেন, “মহামারির কারণে বৈশ্বিক পুনরুদ্ধারের গতি এবং বিতরণ অসম থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন করেছে। আশা করা যায়, একটি জোরদার ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি এবং কৌশলগত অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেশটিকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের দিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিবিদ সৌরাভ আনান্দ বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এদেশের ২০২১ অর্থবছরের প্রত্যাশিত জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫.৫% এবং আশা করা যায় ২০২২ সালে এর বৃদ্ধি ৭.২% এ উন্নিত হবে। দেশের রপ্তানি চাহিদা পুনরুদ্ধার, শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং সরকারী বিনিয়োগ দ্বারা এই প্রবৃদ্ধির বাস্তবায়ন সম্ভব। লক্ষ্য যেখানে ২০২৬ অর্থবছরের মধ্যে মাথাপিছু জিডিপি ৩,০০০ ডলারে উন্নিত করা, মধ্যম আয়ের স্থিতিতে সেখানে পলিসি সাপোর্ট হলো একটি স্মুথ ট্রানজিশনের পূর্বশর্ত।“
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “বাংলাদেশ সরকারে দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ গুলোর কারণে বাংলাদেশ মহামারিকালের বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই বেশ ভালো ভাবেই অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিস্থাপকতা নিয়ে আমরা আশাবাদী। এছাড়া ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি যেহেতু অব্যাহত রয়েছে তাই অর্থনীতিও ক্রমান্বয়ে ত্বরান্বিত হচ্ছে, এছাড়াও অপেক্ষাকৃত ভাবে কম ডেবট-জিডিপি রেশিও দেশের জন্য একটি ফিসকাল রানওয়ে তৈরি করেছে। টেকনোলজি অ্যাডাপশন, টেকনোলজি ইনক্লুসিভনেস এবং আইটিইএস সেক্টরের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উল্লেখযোগ্য সুযোগ রয়েছে, আর সহায়ক শাসনপ্রণালী বেসরকারি বিনিয়োগ এবং এফডিআইকে ত্বরান্বিত করবে।”
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, এমপি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় আবারও আমাদের অসাধারণ স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করেছে। এর ফলে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আমরা সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছি। একটি ব্যবসায়-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ পরিবেশের মাধ্যমেই আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির যাত্রায় অগ্রসর হতে পারবো।”
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ক্লায়েন্ট সার্ভিস এজেন্ডা শুধু যে তার ক্লায়েন্টদের ব্যাংকিং এবং আর্থিক সেবা প্রদানের উপরই দৃষ্টি দেয় তা নয়, বরং ক্লায়েন্টদের ইন্ডাস্ট্রি ল্যান্ডস্কেপ, অর্থনৈতিক ট্রেন্ডস, এবং বাজার গতিশীলতা সংশ্লিষ্ট গবেষণা সামগ্রী ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির গ্লোবাল রিসার্চ টিম দ্বারা পরচালিত গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-এর একটি ফ্ল্যাগশিপ বাৎসরিক ইভেন্ট। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বৈশ্বিক এফএক্স মুভমেন্ট এই অনুষ্ঠানের আলোচ্য বিষয়।
এ বছরের অধিবেশনের আলোচ্য বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন গ্লোবাল হেড অব রিসার্চ অ্যান্ড চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট এরিক রবার্টসন; হেড অব এএসএ এফএক্স রিসার্চ দিভয়্যা দেভেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিবিদ সৌরাভ আনান্দ। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিং থেকে এ বছরের গবেষণার ফলাফলগুলি অনুসরণ করা হয়। গবেষকগণ মহামারি থাকা সত্ত্বেও গতবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদী ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
এএ