ক্যাপিটাল মার্কেটের মাধ্যমেই বুঝতে পারি, দেশের অর্থনীতিটা কেমন চলছে। ক্যাপিটাল মার্কেট যদি ভাইব্রেন্ট না হয়, তখন মনে হয় অর্থনীতিটা কেনো যেনো একটু স্লো হয়ে গেছে। একটা ভাইব্রেন্ট ক্যাপিটাল মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণ থাকে। নিশ্চয় সবাই রিটার্নের জন্য আসেন। তবে ভুল সিদ্ধান্তের কারনে কারো কারো ক্ষতিও হয়ে যায়। লাভ-ক্ষতি হবেই। পৃথিবীর সব ব্যবসা বাণিজ্যেই লাভ-ক্ষতি হয়। এই কারনেই সবাই ব্যবসা করে না। সবাই যদি লাভ করত, তাহলে কেউ চাকরী করতো না।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধ্যাপক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম রোববার (১০ অক্টোবর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ‘সচেতন বিনিয়োগ, টেকসই শেয়ারবাজার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।
অধ্যাপক শিবলী বলেন, ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি ধর্মে হালাল। তবে ব্যবসা করতে গিয়ে প্রতারণা বা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হারাম। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে অনেকে অসতর্ক হয়ে যায়। এছাড়া আদর্শের জায়গা থেকে সরে যায়। তাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারনে সমাজের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে। এ জিনিসগুলো আমাদের শেয়ারবাজারেও দেখা যায়। তাদের মতো অল্প কিছু লোকের ভুলে বা ইচ্ছাকৃত অসৎ উদ্দেশ্যের কারনে আমাদের অনেকের অসম্মান হয়।
তিনি বলেন, আমাদের বাজার সুন্দরভাবে চলছে, লেনদেন বাড়ছে, অন্যান্য বিষয়গুলো সুন্দরভাবে চলছে। আমরা ফ্রন্ট্রিয়ার মার্কেট থেকে ইমার্জিং মার্কেটে যাওয়ার পথে আছি। সেখানে আমাদের বাধা-বিপত্তি থাকবে। এসব থাকবেই। সেগুলোকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুত ইমার্জিং মার্কেটে পরিণত হব। আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটকে ভাইব্রেন্ট রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে ডিবিএ। তারাই এ মার্কেটকে জমিয়ে রাখে।
পুঁজিবাজার সবার জন্য হলেও না বুঝে আসা যাবে না বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। অন্যথায় ঠকতে হবে। এজন্য অন্যকে দোষারোপ করে কোন লাভ হবে না। সুতরাং আগে থেকেই শিক্ষা ও সচেতনতা নিতে হবে। এ বিষয়ে ডিবিএ ও বিএএসএম ভালো প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল টার্মস অনুযায়ি, আপনি যত রিস্ক নেবেন, তত রিটার্ন বেশি হবে। এক্ষেত্রে যার সক্ষমতা আছে, সে রিস্ক নিতে পারে। রিস্ক নিতে গিয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাও আছে। তাই স্বল্প পুঁজি নিয়ে রিস্ক নেবেন না। এছাড়া ঋণ নিয়ে রিস্ক নেবেন না। তাই শিক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ডিবিএ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ডিবিএর সবাই ভালো ব্যবসা পরিচালনা করছেন জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, তবে দু-একজন ব্যতিক্রম। যে কারনে দু-একজনকে শাস্তির আওতায় আনতে হয়েছে। যা করতে আমাদের খারাপ লাগে। কারন সবাই আমাদের খুব আপন। আমরা চাই সুন্দর সর্ম্পক্য রেখে ঐক্যমতের ভিত্তিতে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে। তাই গুটি কয়েকজনের জন্য পুরো ডিবিএর যেনো বদনাম না হয়, এ ব্যাপারে ডিবিএকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন. আমাদের সৎ ও সুন্দরভাবে আয় করার সুযোগ তৈরী হয়েছে। তাই ডিবিএকে বলব সুন্দর পরিবেশে তার সকল সদস্যদেরকে ব্যবসা করানোর জন্য। তিনি বলেন, আপনারা যে ফ্রি লিমিট নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা বলছেন, এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছি। সিসিবিএল হয়ে গেলে এ সুবিধা বাড়িয়ে দেব। হয়তো আগামি ৩ মাসের মধ্যে সিসিবিএলের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। এছাড়া যেসব ব্রোকারদের লেনদেন ভালো, অতিত রেকর্ড ভালো, সেসব প্রতিষ্ঠানকে এ মাসের মধ্যেই আশা করি ফ্রি লিমিট নিয়ে সুখবর দেব।
তিনি বলেন, কিভাবে পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়ানো যায়, কিভাবে মানুষকে পুঁজিবাজারমূখী করা যায়, কিভাবে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করতে পারে-এ নিয়ে ডিবিএকে কাজ করতে হবে। এছাড়া কিভাবে নতুন নতুন পণ্য বাজারে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা ডেরিভেটিবস ও কমোডিটি নিয়ে চাপ দিতে চাই না। আপনারা নিজেরাই উদ্যোগ নেবেন। অন্যথায় এই বাজারকে বড় করা যাবে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে ডিএসই ও সিএসই।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূইয়া। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও ও ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী। আর অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএএসএম এর ডিজি ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী ও ডিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাজেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিবিএ সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
সানবিডি/এসকেএস