বাংলাদেশি নাগরিকদের ইইউতে আশ্রয় আবেদনের হার বৃদ্ধি
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-১০-১২ ১৬:২৪:৪৫
২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের দেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের এসাইলাম আবেদনের হার প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের তথ্য মতে, প্রথম প্রান্তিকে সর্বমোট এসাইলাম আবেদনের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪২৫ জন যা পরবর্তী দ্বিতীয় প্রান্তিকে পরবর্তী তিন মাসে প্রথমবারের মতো এসাইলাম আবেদন করেছেন ৩ হাজার ৫২০ জন। সেই হিসেবে ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে এসাইলাম আবেদন করেছেন ৫ হাজার ৯৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাতাশটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়ছে ইতালিতে, এসাইলাম আবেদন করেছেন ২ হাজার ৩৫০ জন বাংলাদেশি, ফ্রান্সে ১ হাজার ৭২৫ জন এবং গ্রিসে ৮২৫ জন রয়েছেন। বলকান এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এসাইলাম আবেদনকারী বেশিরভাগ বাংলাদেশি উক্ত দেশগুলোতে আশ্রয়গ্রহণ করেন।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে বলকান অঞ্চলের পথ পাড়ি দিয়ে পর্তুগালে আগমনকারী এক বাংলাদেশি ব্যক্তিগত পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে জানান, এই বিপদসংকুল পথে যাত্রা শুরু করার দ্বিতীয় দিনের মধ্যে জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হয়েছে কেননা পিছনে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।
কারণ সামনে আলোর দেখা থাকলেও পিছনে ছিল একমাত্র মৃত্যু। ভাগ্য আমাকে সায় দিয়েছে কিন্তু একই সাথে যাদেরকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম এদের দুই-তৃতীয়াংশ শুধুমাত্র গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছি। এক-তৃতীয়াংশ সহযাত্রীর লাশ ফেলে আসতে হয়েছে এমনকি তাদের যথাযথ নিয়মে সমাহিত করা হয়নি। তাছাড়া তাদের মৃত্যুর খবর স্বজনদের কাছে পৌঁছায়নি।
তিউনিশিয়া ও লিবিয়া হয়ে মধ্য ভূমধ্যসাগরে অথৈ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গমনের এ রুটটি আমাদের বাংলাদেশিদের আরেকটি উল্লেখযোগ্য রুট। প্রতি ২/১ মাস পর পরই নৌকাডুবির খবরে আমরা বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থান খুঁজে পাই। তবে যাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় বা যেকোন সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন ফিরে পেয়েছেন তাদের খবরটাই শুধু আমরা জানতে পারি তবে যারা সমুদ্রে নৌকাডুবিতে বা দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে প্রাণ দিয়েছেন তারা অজানাই থেকে যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে চলতি ২০২১ সালে শুধুমাত্র দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রথমবারের মতো আবেদন করেছেন ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৯৫ জন যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১৫ শতাংশ বেশি। উক্ত এসাইলাম আবেদনের শীর্ষে রয়েছে সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক এবং পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশ।
সানবিডি/ এন/আই