দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল (টিটি) ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) খাতের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ দুটি পণ্য উৎপাদনের দিকে নজর দিলে পোশাক খাত করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) জিআইজেড, জিএফএ এবং বিজিএমইএ’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক ‘হাইব্রিড’ ইভেন্ট এর মাধ্যমে গবেষণা ফলাফল অনুষ্ঠানে এ সম্ভাবনার কথা উঠে আসে। বিজিএমইএ’র সহযোগিতায় জার্মান উন্নয়ন সংস্থা, জিআইজেড পরিচালিত ‘বাংলাদেশে ব্যক্তিগত সরঞ্জামাদিসহ (পিপিই) টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভব্যতা’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে বলা হয়, বিগত বছরগুলো জুড়ে বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে টেক্সটাইল ও পোশাকখাতের অন্যতম বৈশ্বিক সরবরাহকারী হিসেবে তার অগ্রণী অবস্থান নিশ্চিত করেছে। চলমান করোনার মধ্যে এ অবস্থান ধরে রাখাই দেশটির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন ও মূল্য সংযোজন করা যেতে পারে, যদি কি-না খাতটি টেকনিক্যাল টেক্সটাইল (টিটি) ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) উৎপাদনের দিকে নজর দেয়।
জিআইজেড বাংলাদেশের টেক্সটাইল ক্লাস্টার কোঅর্ডিনেটর ওয়েরনার ল্যাঙ্গে বলেন, আমরা এই ফলাফল বিশেষ করে ঘাটতির জায়গা, মূল কাজ ও নতুন বাজারে প্রবেশে টেকসই ও কমপ্লায়েন্টভাবে এই নতুন বাজারে প্রবেশে বাংলাদেশকে সহায়তার সার্বিক কৌশলগুলো শেয়ার করতে পেরে গর্বিত।
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রোস্টারের উপস্থিতিতে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি মিরান আলী, জিআইজেড বাংলাদেশের টেক্সটাইল ক্লাস্টার কোঅর্ডিনেটর ওয়েরনার ল্যাঙ্গে এবং জিআইজেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এনজেলিকা ফ্লেডডারমেন, বিজিএমইএর পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, টেক্সের এসিটেন্ট ডিরেক্টের তরিকুল ইসলাম; জিআইজেডের বিজনেস স্কাউট থমাস হাবনার এবং গবেষণার প্রবন্ধকার জিএফএর কনসালটেন্ট চার্লস ডেয়ার ও গবেষণায় তার সহকর্মী ড. রাজেশ ভেদা প্রমুখ সাব সেক্টরের (টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এবং পিপিই খাতের) জন্য উঠে আসা প্রস্তাবগুলো এবং প্রস্তাবগুলোর চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, শিল্প টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ও পিপিইর সম্প্রসারণশীল বাজার ধরতে প্রস্তুত আমরা। টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ও পিপিই খাতে যৌথ বিনিয়োগ আমরা স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে ব্র্যান্ড, টেস্টিং সার্ভিসেস কোম্পানি ও প্রযুক্তি সররবাহকারীদের সহায়তা নিয়ে এক সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সম্ভাবনা আমরা বাস্তবে রূপ দিতে চাই।
তিনি বলেন, কমপ্লায়েন্ট হওয়ার স্বীকৃতি এবং ইইউ ও মার্কিন বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ট্রেডিং পার্টনার হিসেবে অর্জিত খ্যাতিকে পুঁজি করার জন্য গবেষণায় বাংলাদেশকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একবার বাংলাদেশ নতুন খাতটিতে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এবং পিপিই খাতে আস্থা ও নির্ভরযোগ্যতা তৈরি করতে সমর্থ হলে উন্নত প্রযুক্তি চালু করা যেতে পারে। এগুলো পণ্যকে বৈচিত্র্যময় ও পণ্যের পোর্টফোলিওকে পরিশীলিত হতে সাহায্য করবে, যা থেকে অধিক মুনাফা আসবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এমনকি সীমিত সংখ্যক পণ্যও যদি উচ্চমান বজায় উৎপাদিত হয়, তাহলেও তাদের জন্য বাজারে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি ও পণ্যের দরজা খুলে যাবে। প্রারম্ভিক উৎপাদনকারীদের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে পরবর্তীতে আরও কোম্পানি সুযোগ লুফে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসবে। ফলে সাব-সেক্টরটি প্রসারিত হবে। এখনো কিছু বড় বাধা আছে। এর মধ্যে রয়েছে- বাজারের চাহিদা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, অপর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত দক্ষতা, উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করার অসুবিধা, কমপ্লায়েন্স ও সার্টিফিকেশনের চাহিদা এবং মূলধন বিনিয়োগের ওপর নির্ভরতা।
জিআইজেড টেক্সটাইল ক্লাস্টার নামক জার্মান উন্নয়ন সংস্থা এই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় অংশীদারদের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা প্রদান করছে। টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে জিআইজেডের সম্পৃক্ত হওয়ার সাফল্যের রূপরেখা তুলে ধরে জার্মান রাষ্ট্রদূত ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
এএ