সরকার নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

---

সরকার দেশের সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) ‘জাতীয় স্যানিটেশন মাস (অক্টোবর)’ এবং ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬.২ এর লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামীণ ও পৌর জনপদে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রায় ১৩ বছরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৩ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। এর ফলে বর্তমানে স্যানিটেশনের জাতীয় কাভারেজ ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি অনিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় স্যানিটেশন মাস এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি অভিনন্দন জানাই। এবারের প্রতিপাদ্য—নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করি, সুস্থ-সবল বাংলাদেশ গড়ি—অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন এবং নিরাপদ পানির উৎসের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে, যা ২০০৩ সালে ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ। অপরদিকে, খোলা স্থানে মলত্যাগকারীর হার ২০০৩ সালের ৪৪ শতাংশ থেকে প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া, নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।’

‘দেশের সব জেলায় পানি পরীক্ষাগার স্থাপনসহ পানি, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক অনেক প্রকল্প চলছে, যা বাস্তবায়ন হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে আমাদের আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও এর প্রয়োগ, সংশিষ্ট ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব উন্নত টয়লেট নির্মাণ ও ব্যবহার এবং স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’

‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা ও এর বিস্তার রোধের সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায়গুলোর একটি নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলা। ভালো করে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ বহুলাংশে কমানো সম্ভব। আমাদের সময়োপযোগী কার্যক্রমের ফলে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এ রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক এ আয়োজন সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিত করে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। এ সামাজিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

এএ