পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তিখাতের কোম্পানি অগ্নি সিস্টেসের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হলো ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি)। সম্প্রতি আইসিবির প্রতিনিধি হিসেবে পর্ষদে যুক্ত হয়েছেন এজিএম মফিজুর রহমান। এর আগে কোম্পানিতে গতি ফেরাতে পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কোম্পানি সূত্র মতে,বর্তমানে পরিশোধিত মূলধনের মাত্র ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। অন্যদিকে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে রয়েছে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ার। গত ৩ থেকে ৪ মাস যাবত কোম্পানির পক্ষ থেকে আইসিবিকে পর্ষদ যুক্ত হওয়ার জন্য চিঠি চালাচালি হচ্ছে। কোনভাবেই আইসিবি কোম্পানির পর্ষদে যুক্ত হতে চায়নি। পরবর্তীতে বিএসইসির অনুরোধে আইসিবি কোম্পানির পর্ষদে যুক্ত হলো।
এদিকে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকা এবং আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বিএসইসি। অগ্নি সিস্টেসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে দুইজন স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয়ন করেছে বিএসইসি। তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ড. রিদওয়ানুল হক ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনসুরা আক্তার। ওই সময়ে আরও ন্যূনতম দুইজন বা তার অধিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মনোনয়নের জন্য কোম্পানিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মনোনীত একজনকে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্তির জন্য বিএসইসি নির্দেশ দিয়েছিলো।
ওই সময়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ডিএসই ও সিএসইর দাখিল করা প্রতিবেদন ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছাই এবং পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পরিশোধিত মূলধনের মাত্র ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে কোম্পানিটি ২০১৯ সালের ২১ মে, ২০২১ সালের ২২ মার্চ, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বরের জারি করা নির্দেশনা এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২সিসি ধরা লঙ্ঘন করেছে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ও আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এরই ধরাবাহিকতায় ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা পরিপালনের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে থেকে ২ শতাংশ বা তার অধিক শেয়ার ধারণকারীদের নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করতে হবে। সেক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের সংখ্যা ন্যূনতম দুইজন বা তার অধিক হতে পারবে। আর কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের ২৭ দশমিক ২১ শতাংশ শেয়ারধারণ থাকায় আইসিবি’র মনোনীত একজন পরিচালক হিসেবে পর্ষদে অন্তর্ভুক্তি করতে হবে। আর ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থতার জন্য বিএসইসি দুইজন ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।
অগ্নি সিস্টেমসের কোম্পানি সচিব মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সানবিডিকে বলেন, ‘অগ্নি সিস্টেমসের পরিচালনা পর্ষদে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছে। এর জন্য আমরা কোম্পানির সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অগ্নি সিস্টেমস। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ৭২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা পরিশোদিত মূলধনের এ কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১ দশমিক ৭৭ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মাত্র ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।