চলতি বছরের পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী (পিইসি) ও মাদরাসা শিক্ষা সমাপনী (ইবতেদায়ি) পরীক্ষা বাতিলে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে অনুমোদন দিয়ে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফলে এবছর পিইসি-ইবতেদায়ি পরীক্ষা হচ্ছে না। চলতি সপ্তাহে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রতি বছরের নভেম্বরে পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হলেও এ বিষয়ে এ বছর আগে থেকে সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তাই চলতি বছরের পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সচল হয়েছে সরাসরি ক্লাস পাঠদান কার্যক্রম। তবে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি। গত তিন মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন তিনটি বিষয়ে ছয়দিন করে ক্লাস করছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। টেলিভিশন, রেডিওসহ নানা মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল। তবে আন্ত মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলা হয়েছে। এখন ২০২১ শিক্ষাবর্ষের মাত্র দু-তিন মাস অবশিষ্ট আছে। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও মুদ্রণ, দেশব্যাপী একযোগে এই পরীক্ষা পরিচালনা করা এবং নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য হবে। করোনা সংক্রমণজনিত কারণে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনীও গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকেও জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বল্প সময়ে ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে শিখন-শেখানো কার্যক্রম বিবেচনা করে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণের পরিবর্তে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, জেএসসি ও পিইসি কোনো পাবলিক পরীক্ষা নয়। এই পরীক্ষা দুটি সরকারের নির্বাহী আদেশে নেওয়া হয়। এ জন্য এই পরীক্ষা না নিতে হলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বছরের পিইসি ও ইবতেদায়ি না নেওয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এএ