স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় রানের বিব্রতকর হার দিয়ে এবারের টি ২০ বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশের প্রথম রাউন্ড পার করা নিয়ে শঙ্কার অবকাশ এখন যথেষ্টই। নিজেদের বাকি দুই ম্যাচ জেতার পাশাপাশি ‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলোর দিকেও চোখ রাখতে হবে মাহমুদউল্লাহদের।
শুরুর হতাশা পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে আজ স্বাগতিক ওমানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ওমানের মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচ। একই ভেন্যুতে বিকাল ৪টায় দেখা হবে স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনির (পিএনজি)। গ্রুপের সেরা দুই দলের একটি হিসাবে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার সমীকরণ মেলাতে এই ম্যাচটিও বাংলাদেশের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্বোধনী ম্যাচে বিশ্বকাপ মঞ্চে নবাগত পিএনজিকে ১০ উইকেটে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে ওমান। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে পিছিয়ে দুইয়ে স্কটল্যান্ড। বাংলাদেশ ও পিএনজি পয়েন্টের খাতা খুলতে পারেনি। নিজেদের ম্যাচে বাংলাদেশ হারলে এবং স্কটল্যান্ড জিতলে আজই বেজে যাবে বাংলাদেশের বিদায়ঘণ্টা। সেক্ষেত্রে এক ম্যাচ হাতে রেখে সুপার টুয়েলভ পর্বে চলে যাবে ওমান ও স্কটল্যান্ড।
অন্যদিকে স্কটিশদের বিপক্ষে যদি পিএনজি জেতে সেক্ষেত্রে ওমানের কাছে হারলেও বাংলাদেশের গাণিতিক সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে। তবে পিএনজির কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশা না করাই ভালো। শেষ ১২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচেই হেরেছে তারা। অন্যদিকে স্কটল্যান্ড আছে আগুনে ফর্মে। ক্রিস গ্রিভসের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে হারিয়েও শতভাগ তৃপ্ত নন স্কটিশ অধিনায়ক কাইল কোয়েটজার, ‘আমরা জানি, মূলপর্বে যেতে আমাদের খুবই ভালো খেলতে হবে। সামর্থ্যরে সেরাটা এখনো দেখাতে পারিনি আমরা। মোমেন্টাম ধরে রাখতে পরের ম্যাচে আরও নিখুঁত ক্রিকেট খেলতে চাই।’
পিএনজির বিপক্ষে আগের দুটি টি ২০ ম্যাচেই জিতেছে স্কটল্যান্ড। যার শেষটি এ মাসেই। প্রথম ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে নিজেদের সীমিত সামর্থ্যরে ঝলক দেখিয়েছে পিএনজি। ফিফটি করেছেন অধিনায়ক আসাদ ভালা (৫৬)। দলের আরেক তারকা চার্লস আমিনিও (৩৭) রান পেয়েছেন। তারপরও ওমানের কাছে পাত্তা পায়নি পিএনজি। তাদের ১২৯ রান ৩৮ বল ও ১০ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় ওমান। এমন প্রতিরোধহীন হারের পরও আশা হারাচ্ছেন না অধিনায়ক আসাদ ভালা, ‘স্কটল্যান্ড ও বাংলাদেশকে নিয়ে খুব বেশি না ভেবে নিজেদের পারফরম্যান্সে মনোযোগ দিতে চাই আমরা। প্রথম ম্যাচে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এরচেয়ে ঢের ভালো খেলার সামর্থ্য আছে আমাদের।’
স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও শুনিয়েছেন আশার বাণী, ‘মূল পর্বে (সুপার টুয়েলভ) যাওয়া নিয়ে চিন্তা হচ্ছে না। প্রথম ম্যাচে আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারিনি। পারলে ফল আমাদের পক্ষেই আসত। অন্য কিছু না ভেবে আমাদের এখন সেরা ক্রিকেট খেলার কথাই চিন্তা করতে হবে। আমাদের সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি।’ সুযোগ শেষ না হলেও বাংলাদেশের নামের পাশে যোগ হয়েছে দুটি বিব্রতকর রেকর্ড।
টি ২০ বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসাবে ২০ হারের মাইলফলক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। এত হার নেই আর কোনো দলের। এছাড়া টি ২০ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় পাঁচটি অঘটনের দুটির শিকার বাংলাদেশ। এবারের স্কটিশ ট্র্যাজেডির আগে ২০১৪ বিশ্বকাপে হংকংয়ের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। আর কোনো দলের দুবার পচা শামুকে পা কাটেনি। ২০১৬ বিশ্বকাপে ওমানকে উড়িয়ে দেওয়ার সুখস্মৃতিও তাই এবার শঙ্কার মেঘ কাটাতে পারছে না। পাঁচ বছর আগের ওমানের চেয়ে এই ওমান ঢের শক্তিশালী। তারা খেলছে নিজেদের আঙিনায়।
সানবিডি/ এন/আই