পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পদত্যাগের গুজবে টালমাটাল পুঁজিবাজার। তবে এর কোন ভিত্তি নেই বলে সানবিডিকে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকষ অধ্যাপক ও বিএসইসির কারিশমাটিক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম। তিনি বলেন, এটি পুরোই গুজব।
পুঁজিবাজার সার্বিক সুশাসনের ঘাটতি আর ক্রমাগত সূচক ও শেয়ারের দরপতনের এক ক্রান্তিলগ্নে বিএসইসির হাল ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দায়িত্ব নেন তিনি। তার সাথে যুক্ত হয়েছেন আরও তিন চৌকষ কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সাবেক সফল সচিব আব্দুল হালিম। যোগ্য নের্তৃত্বে বাজারের নানামুখী সংস্কার শুরু হয়। এগিয়ে যেতে থাকে পুঁজিবাজার। এরপর করোনার ছুটি কাটিয়ে ৩১মে ফের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তারপর থেকেই নতুন নতুন চমক দেখতে পায় বাজার সংশ্লিষ্টরা। নতুন কমিশনের করিৎকর্মা কিছু সিদ্ধান্তে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করে। ফলে বাজারমুখী হয় সাইটলাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা। তার ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজারে চাঙা ভাব তৈরি হয়।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
পুঁজিবাজারের এমন পরিস্থিতিতে থেমে নেই কুচক্রি মহল। বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারকে আরবও অস্থির করার চেষ্টা করছে একটি মহল। বিভিন্ন গুজবের সাথে যুক্ত হয়েছে চৌকষ চেয়ারম্যানের পদত্যাগের বিষয়টি। ফলশ্রুতিতে গত ১১ অক্টোবর থেকে পুঁজিবাজারে টানা পরপতন চলছে। ওই দিন লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২০ পয়েন্টে। সাত কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৩৪৭ পয়েন্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টোর কথা বলা হচ্ছে বিএসইস’র পক্ষ থেকে। অপরদিকে গুজবের ফলে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করেছেন আতঙ্কিত বিনেয়োগকারীরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু গুজব নয় বিমা খাতের কোম্পানির পরিচালকদের একযোগে বিপুল শেয়ার বিক্রিতেও সূচক কমছে পুঁজিবাজারের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, ফেসবুক এবং দু-একটি অনলাইন পোর্টালে নিউজ করা হয় যে, বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। আসলে যেটা পুরোটাই ছিল গুজব। আবার কেউ কেউ লিখছে বিএসইসি চেয়ারম্যান গভর্নর হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে যাচ্ছে। আসলে এসব গুজবের জন্য বাজার পড়ে যাবে বা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পরার বিষয়টি ঠিক নয়। শুধু গুজবের কবলে নয়,বরং বিমা খাতের কোম্পানির পরিচালকদের একযোগে বিপুল শেয়ার বিক্রির চাপ পরেছে পুঁজিবাজারের উপর।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পরার সুযোগ নিবে বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তারা। ১৯ জন যখন দেখলো তাদের শেয়ারের ৩-৪ গুণ বেড়ে গেছে যেটা তাঁরা আশাও করেনি। সুতরাং তারা সুযোগ তো নিবেই। আসলে স্টক মার্কেটেতো সবচেয়ে বেশি বেনিফিটেড তো হচ্ছে তো তারাই যারা বেশি ফাউল প্লে করছে তারা।
এদিকে পদত্যাগের ঘটনা সম্পূর্ণ গুজব বলে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে বিনেয়োগকারীদের আরও বেশি সাবধান থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের ইনডেক্সকে প্রভাবিত করা, দাম কমিয়ে কেনার চেষ্টা করা এবং প্যানিক তৈরী করে সুবিধা নেওয়ার জন্য বেশ কিছু মহল বিভিন্ন সময়ে গুজব রটাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিনেয়োগকারীদের সাবধান থাকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার থাকার অনুরোধ করছি।
এদিকে গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এর আগে ২০১০ সালে দেশের পুঁজিবাজার বড় ধরণের ধাক্কার সম্মুখীন হয়। ওই সময় বেশিরভাগ কোম্পানির রেকর্ড পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও তাদের মূলধন হারিয়েছিল। এছাড়াও বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী সে সময় শেয়ারবাজার ছেড়েছে। ২০১০ সালের সেই ধাক্কা সামলে উঠতে প্রায় এক দশক সময় লেগেছে।