ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, রাজধানীতে বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চায়। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সহায়তা চেয়েছি। তিনি আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সাবেক এই ডাকসু ভিপি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর তেজগাঁওয়ের গুম হওয়া বিএনপি নেতা সুমনের বাড়িতে মিলাদ মাহফিল ছিল। মিলাদের পরে তার ৮১বছরের মাকে দেখতে গিয়েছিলাম, সেখানে পুলিশ ঘেরাও দিয়ে আমাদের প্রায় ২০/২৫জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। অনেককে মারধর করেছে। আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। গুম হওয়া সুমনের মা বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম-আহবায়ক আক্তারুজ্জামানকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন। তার হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে পুলিশ। এর আগে ২৩ অক্টোবর উত্তরখানে কর্মী সম্মেলন ছিল, সেখানে চার ট্রাক পুলিশ গিয়ে সভা পণ্ড করে দিয়েছে। ২৬ অক্টোবর ১৭ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মীসভা ছিল, সেখানেও পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরে একটা ফরম বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল; সেখানেও পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার করে। ১৭ আগস্ট নবনির্বাচিত মহানগর কমিটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম, সেখানে আমাদের ওপর বিনা উস্কানিতে আক্রমণ করেছে, টিয়ার সেল মেরেছে, গুলি ছুঁড়েছে। অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে সবাই যাওয়ার সময় আক্রমণ করেছে। এ বিষয়গুলি ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করেছি। আমরা মহানগরীর উত্তর এবং দক্ষিণে প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মীসভা করব। শান্তিপূর্ণভাবে সভা করব, এই সভাগুলিতে যাতে কোনোভাবে বাধা না দেওয়া হয় সেটা বলেছি।
তিনি বলেন, আমরা আরও বলেছি, আওয়ামী লীগ তাদের কার্যালয় থেকে সভা করে মিছিল বের করছে, তারা যদি সভা করে মিছিল বের করতে পারে, আমরা কেন পারবো না। সব নাগরিকের সমান অধিকার, সেই সমান অধিকার থাকতে হবে। গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত শান্তিশৃঙ্খলা, সেই শান্তি বজায় রেখেই আমরা আন্দোলন করছি এবং করতে চাই।
তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র অনুপস্থিত, কারও কথা বলার অধিকার নেই। সাংবাদিকদের লেখার অধিকার নেই। কোনো মাঠে সভা সমাবেশ করতে পারছি না। সেই বিষয়গুলি অবহিত করেছি। তিনি (কমিশনার) বলেছেন, এ ব্যাপারে কথা বলবেন এবং আমরা যাতে সভা সমাবেশ করতে পারি সে ব্যাপারেও উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
আমরা আগামী ৯ নভেম্বর থেকে উত্তর এবং দক্ষিণের প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মসূচি পালন করব। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব, আপনারা সহযোগিতা করবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা দেবেন। সে কথাগুলি বলে তাকে চিঠি দিয়েছে। চিঠির গ্রহণের কপি আছে। এরপরও কর্মসূচির আগে আবারও চিঠি দিয়ে জানাব।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, আগামী ৭ নভেম্বর আলোচনাসভা করব, সে ব্যাপারে অনুমতি পেয়েছি। ৫ নভেম্বর ঐক্যবদ্ধ মহানগরীর সাবেক সভাপতি সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুই মহানগর কমিটি যৌথভাবে একটা আলোচনাসভা করব, সে ব্যাপারে উনি (ডিএমপি কমিশনার) বলেছেন অসুবিধা হবে না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
এএ