নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এম এ কাশেম সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও আর্থিক জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর আজিম-কাশেম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন একটি সংবাদ সম্মেলন করে। পরে ২৭ অক্টোবর মানববন্ধন করে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণসহ দুদকে স্মারকলিপি জমা দেয় সংস্থাটি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আজিম-কাশেমের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে দুদক।
আজিম-কাশেম সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ প্রসঙ্গে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন বলছে, আজিম-কাশেম সিন্ডিকেট পূর্বাচল সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৫০ বিঘা নিচু জমি কিনে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা লোপাট করেছেন। তারা ২০১৪ সালে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভলপার্স লিমিটেডের কাছ থেকে ৮০ কোটি টাকার জমি ৫০০ কোটি দিয়ে কিনে সেই টাকাও আত্মসাত করেন।
অভিযোগে বলা হয়, এই নিচু জমি ভরাটের নামেও ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। আর আজিম-কাশেম সিন্ডিকেট যে ডেভলপার্স কোম্পানির কাছে থেকে জমি কিনেছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রত্যেকে ১৪ কোটি টাকারও বেশি কমিশন নিয়েছেন। আশালয় হাউজিং কোম্পানির ডাচ বাংলা ব্যাংকের বনানী শাখার অ্যাকাউন্ট নং-১০৩১২০০০০০০৮৭১ এবং ইউসিবিএল-এর অ্যাকাউন্ট নং-৯৫১১০১০০০০০৮৪১৩ থেকে তারা এই কমিশন দেন।
সংস্থাটির আরো অভিযোগ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের ৯ জন সদস্যের জন্য ২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলাসবহুল ৮টি রেঞ্জ রোভার ও একটি মার্সিডিস বেঞ্জ গাড়ি কেনা হয়। এই গাড়ির চালকদের বেতন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং তেলের খরচও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে বহন করা হয়।
আজিম-কাশেম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অমান্য করে ৮টি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং এলাউন্স আদায় করেন। এসব কমিটির মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সকল ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সম্পত্তির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অর্থের (২০২১ সালের ৩১ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী) ৪৩ ভাগেরও বেশি (৪০৮ কোটি ৪০ লাখ) টাকা নিজেদের মালিকানাধীন সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা রেখেছেন। এই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কাশেম-হাশেম এবং তাদের স্ত্রীরা।
অভিযোগে বলা হয়, আজিম-কাশেমসহ এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা হলেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেনজির আহমেদ, রেহেনা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আজিজ আল কায়সার টিটো।
এএ