রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাসে ফিরেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। তবে এ আন্দোলনের প্রভাব পড়েনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর। বুধবার সকাল থেকে নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম শুরু হতে দেখা গেছে। এদিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক।
শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত ছয় বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন। শিক্ষকদের আন্দোলনে গতকাল রাতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তার নির্ধারিত প্রভাষক পদে যোগদান করলে শিক্ষকরা বাধা দেবেন না।
শিক্ষকরা জানান, অধ্যক্ষ আবুল হোসেন তুচ্ছ কারণে শিক্ষকদের মানসিক নির্যাতন করতেন। কারণে-অকারণে একাধিক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষকদের প্রাপ্য ভাতা ও স্থায়ীকরণ কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছেন। বৈশাখী ভাতা, বকেয়াসহ ইনক্রিমেন্ট বন্ধ, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদায়ন দিয়েছেন।
এ কারণে ১৩ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষকরা সমবেত হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের কারণে এদিন রাতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আবুল হোসেন। তার পদত্যাগের পর শিক্ষকরা আন্দোলন বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ক্লাসে ফেরেন। শিক্ষক আন্দোলনের প্রভাব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা যায়নি। সকাল থেকে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ও নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি মো. ফয়সাল শামীম বলেন, অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্বে বসার পর থেকে শিক্ষকদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাতেন আবুল হোসেন। তুচ্ছ কারণে প্রায় ২৫০ শিক্ষককে শোকজ দিয়েছেন। একাধিক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে এখনও চারজন শিক্ষক কর্মস্থলে যোগদান করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, স্কুল ফান্ডে পর্যাপ্ত অর্থ থাকলেও শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কোনোভাবে অধ্যক্ষ আবুল হোসেনকে সরাতে না পেরে শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন। গতকাল রাতে তার পদত্যাগের পর সকল শিক্ষক আবারও নিজ দায়িত্বে মনোযোগী হয়েছেন।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এই শিক্ষক আরও বলেন, গত ধাপে সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষের পদে দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় শৃঙ্খলভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়েছে। এ কারণে সামরিক বাহিনীর কোনো কর্মকর্তাকে আবারও এ পদে বসানো ও নিয়মিত পরিচালনা কমিটির বদলে বিশেষ কমিটি গঠনের দাবি জানাই।
সানবিডি/ এন/আই