রাজধানীর রামপুরায় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে অর্ধেক ভাড়া না নিয়ে এক শিক্ষার্থীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পরিবহনটির প্রায় ৫০টি বাস আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দীর্ঘসময় আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নিতে রাজি হয়েছে রাইদা পরিবহনের মালিকপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র দেখানো মাত্র তাদের অর্ধেক ভাড়া নেবে বলে রাইদা কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ইম্পিরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাইদা পরিবহনের সমঝোতা প্রায় শেষ দিকে। শিক্ষার্থীদের সব দাবি রাইদা পরিবহন কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা রাইদা পরিবহনের কাছে দাবি করে, নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা শহরের যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয়পত্র দেখালে তাদের হাফ ভাড়া নিতে হবে। এছাড়া প্রতিটি বাসে নারীদের জন্য যে ৯টি আসন সংরক্ষিত থাকে সেখানে কোনোভাবেই নারীরা ছাড়া পুরুষ বসতে পারবেন না।
তিনি বলেন, রাইদা পরিবহনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এসব দাবি মেনে নিয়েছেন এবং আমাদের এসব বাস্তবায়নের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। সমঝোতা প্রায় শেষ দিকে। সমঝোতা শেষে এই রাস্তায় আটকে থাকা বাসগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে।
ডিএমপির মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের রামপুরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তানভীর রহমান বলেন জানান, এই ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও রাইদা পরিবহন কর্তৃপক্ষ সমঝোতা করছে রামপুরা থানায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন। ঘটনার শুরুতে শিক্ষার্থীরা পঞ্চাশটির মতো বাস রাস্তায় আটকে রাখে। আটকানো বাসগুলোর মধ্যে ৩০টি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আর ২০টি এখনো আটকানো রয়েছে। সমঝোতা শেষে বাসগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর রামপুরায় বিটিভি ভবনের সামনে রাইদা পরিবহনের একটি বাস থেকে এক শিক্ষার্থীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামানোর অভিযোগে পরিবহনটির প্রায় ৫০টি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ওই সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে ঘটনার পর রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, রাইদা পরিবহনের একটি বাস যখন বিটিভি ভবনের সামনে আসে তখন বাসে থাকা এক শিক্ষার্থী চেকারকে হাফ ভাড়া নেওয়ার কথা বলে। চেকার তা না নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাকে বাস থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থী তার আশপাশের বন্ধুদের ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে রাইদা পরিবহনের প্রায় ৫০টি বাস আটক করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলে তারা সড়ক থেকে সরে যায় এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। অভিযুক্ত বাসটি আটক করা হয়েছে। বাস কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানে আলোচনা চলছে বলেও জানান ওসি।
এএ