আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার(ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস) আত্মীয়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে আটক হয়েছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা।
তাকে আটক ও এতে আওয়ামী নেতার ইন্ধনের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে মালোচনার ঝড়। প্রথমে থানায় ডেকে নিয়ে আটক ও পরে অন্য একটি মামলায় সোহেল রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ৩১ জানুয়ারি দুপুর ২টার দিকে ঢাকা কলেজ সংলগ্ন পেট্রোল পাম্পের সামনে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সোহেল রানার সঙ্গে একজনের বাকবিতণ্ডা হয়। ঘটনাস্থলেই এর মীমাংসাও হয়ে যায়।
এরই কিছু সময় পর নিউ মার্কেট থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত সোহেল রানাকে ডেকে পাঠান এবং ফোনে বলেন, ১০ মিনিটের মধ্যে থানায় না আসলে পুলিশ-র্যাব দিয়ে ধরিয়ে আনা হবে। ফোনালাপ শেষ করে সোহেল রানা থানায় গেলে তাকে আটক করা হয়।
আটকের পর রাত ১২টা পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি পুরনো একটি মামলায় আটক দেখিয়ে এজহারে আরো দুটি মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে কোর্টে তোলা হয়। এজহারে উল্লিখিত সন্দেহভাজন দুই মামলায় একদিন করে দুই দিনের রিমান্ড চাইলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
নেতার আত্মীয়র সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জেরে পুরনো মামলায় গ্রেফতার ও নতুন করে দুই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রিমান্ডে দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসাইন তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন, একজন মনির ও একজন সোহেল শিরোনামে।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশে সোহেলরা ছাত্রলীগের পতাকা বহন করে আর মনিররা বহন করে গোলাবারুদ আর মওদুদীর বইয়ের পুটলি। সোহেলদের অন্যায় হলো তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্য রাজপথে মরতে চায়। আর মনিররা দেশরত্ন শেখ হাসিনার মরণ চায়!
সোহেলরা যদি মনিরদের মত হতো তাহলেই এখন ভালো থাকত। মনিররা সবার কাছ থেকে সুবিধা নিতে পারে। কারণ নেতারা তাদের বসতে বললে তারা শুয়ে পড়ে। সবাই তাদের নিরাপদ মনে করে। কালকে সোহেলকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেখলাম অনেকেই আমার বিপক্ষে বলা শুরু করছে।
সোহেলকে ক্রসে দিলেই ওরা খুশি হত। কিছু বড় নেতার ধর্ম হলো বিপদে পড়লে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। আমিই থেমে গেলাম। কারণ ইদানিং শত্রুর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে, আর বাড়িয়ে কী লাভ?
তবে এই লেখা পোস্ট করার পর আরও কিছু বাড়বে। সোহেলকে নিয়ে “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ” নামে একটা পেজ থেকে বাজে কিছু লেখা লেখতে দেখলাম। পেজটা মনে হয় ভুয়া। এরা কারা তা খোঁজ নেয়া উচিত। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ এসব নোংরামি করতে পারে বলে আমি মনে করি না। মানুষই অন্যায় করে তাই সোহেলেরও ভুল হতে পারে। তার বিচার অন্যভাবেও করা যেত।
ধানমন্ডি এলাকার মাননীয় সংসদ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ভাইয়ের প্রতি অনুরোধ আপনি বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করে দিন। আপনারাই সোহেলদের রোলমডেল, আপনাদের দেখানো পথেই তারা হাটতে চায়। দয়া করে মনিরদের মত চামবাজদের শাস্তি দিন।