সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বিস্তীর্ণ যমুনার চরে সবজ সবজিতে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। বেগুন, মুলা, পালংশাক, শিম, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, টমেটো, লালশাক, বরবটি ও শসাসহ নানা ফসলের সমারোহ চারিপাশে। সবুজ-শ্যামল এসব সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
চলতি বছর ব্যাপক বন্যার পরও শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকরা। ‘সবজি গ্রাম’ নামে খ্যাত উপজেলার ধুপুলিয়া চর, বাউশা চর উমারপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরভূমি এখন ভরে উঠেছে সবুজ সবজিতে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চরাঞ্চলে এবার লালশাক ২৬ হেক্টর, মুলা ৫৪, পালংশাক ৩৪, বেগুন ৫৯.৫, মুলাশাক ১১, শিম ৩০, লাউ ৬৩, ধনেপাতা ২১.৫, ফুলকপি ৯, আলু ২৩.৫, বাধাকপি ১, বরবটি ১৪, ক্ষিরা ২, মিষ্টিকুমড়া ৮ ও টমেটো ১ হেক্টর জমিতে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মিনিদিয়া চরের কৃষক সামাদ মিয়া, ধুপুলিয়া গ্রামের কৃষক মকছেদ আলী, সুলতান মিয়া, বাউশা গ্রামের কৃষক আলিম ও সবুজ বলেন, এবার শীতকালীন সবজির দাম অনেক বেশি। তাই বন্যায় আমাদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সবজির দাম বেশি হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে। এবার ব্যাপক বন্যা হওয়ায় ক্ষেতে পলিমাটি পড়াতে ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলে সবজিক্ষেতে সার অনেক কম দিতে হচ্ছে এবং সার ছাড়াই সবজির ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
গত তিন বছরের মতো এবারও অনেকটা আগেভাগেই শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। বাজারে আগাম জাতের শীতকালীন সবজির ভালো দাম থাকায় সবজি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে মাত্র ৮-১০ হাজার টাকা খরচ করে লক্ষাধিক টাকার সবজি বিক্রি করছেন চাষিরা।
চৌহালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ বলেন, এ বছর উপজেলায় ব্যাপক বন্যা হওয়ায় কৃষকরা বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে আগাম সবজি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। আর বাজার ভালো থাকায় উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন তারা। এতে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, এবার উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর। ডিসেম্বরের শুরুতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে ধারণা করছেন এই কৃষিবিদ।
সানবিডি/ এন/আই