শিক্ষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মূলত শিক্ষক সমাজকে নিয়ে হাসি, ঠাট্টা, মশকরা করেছেন। তাই তার বক্তব্য শুনে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত হই।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে আমি বলেছিলাম শিক্ষার জাতীয় বাজেটের ১৮ থেকে ২০ শতাংশ টাকা বরাদ্দ করুন। তা হলেই শিক্ষাখাতে উন্নয়ন সম্ভব। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি চেষ্টা করবো। কিন্তু আজ শিক্ষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যর পর স্পষ্ট হয়েছে যে, শিক্ষামন্ত্রী কোন চেষ্টাই করেননি।’
সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে মনে হয় তিনি তথাকথিত একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি যতটুকু শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তা তার বক্তব্যর মধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। মূলত তার বক্তব্য গ্লানিকর, লজ্জাজনক ও ভুলে ভরা।’
শিক্ষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহতালা প্রধানমন্ত্রীকে শুভবুদ্ধি দিক।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা আপনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না। তাই আপনি তাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাববেন না। পুলিশ, র্যাবসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করুন। এতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আল্লাহর ওয়াস্তে শিক্ষকদের দলীয়করণ করবেন না।’
দুই বিদেশি নাগরিককে হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই হত্যার ফলে জাতি হিসেবে আমরা বর্হিবিশ্বের কাছে লজ্জিত হয়েছি। এতে বর্হিবিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে।’
সরকারকে উদ্দেশ করে সাবেক এ ভিসি বলেন, ‘দুই বিদেশির হত্যাকারিদের খুঁজে বের করতে বিচারপতির নেতৃত্বে জুডিশিয়াল কমিটি গঠন করুন। এই কমিটির কাজ হবে কীভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে এবং কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করা।’
দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত জড়িত- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এমাজ উদ্দিন বলেন, ‘সঠিক তথ্য ব্যতিত কারো ওপর দোষ দেয়া উচিৎ নয়। আর অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হলেও মূল সমস্যার সমাধান কখনো হবে না।’
আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বাবু, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।