বড় জয়ে প্রথমবারের মত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে যুব টাইগাররা ১০ বল হাতে রেখে নেপালের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয়। ৯৮ রানে চার উইকেট পড়ার পরও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আর জাকির হাসানের অপরাজিত ১১৭ রানের জুটিতে এই জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা। জাকির হাসান ৭৭ বলে ৭৫ এবং মিরাজ ৬৫ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
জয়ে মিরাজরা ইতিহাস গড়ল। কারণ, এই প্রথম যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্ব পেরোতে পারল তারা। এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা সাফল্য। এই প্রথম বৈশ্বিক কোনো ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠল টাইগাররা।
এর আগে টস জিতে নেপাল ৯ উইকেটে ২১১ রান করে। শুরুর দিকে পথ হারালেও শেষ পর্যন্ত নেপাল লড়াইয়ের পুঁজি পায় বয়স নিয়ে বিতর্কে পড়া অধিনায়ক রাজু রিজালের ৭২ রানে ভর করে। এছাড়া নেপালের পক্ষে সুনীল ধামালা ২৫, দীপেন্দ্র সিং এইরি ২২ ও প্রেম তামাং অপরাজিত ২২ করে করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে সেরা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। শাওন, মিরাজ ও রানা একটি করে উইকেট নেন। নেপালের ইনিংসে সবচেয়ে বেশি চারজন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন রানআউটের ফাঁদে পড়ে।
২১২ রানের জবাবে শুরুতেই ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। দলীয় ১৭ রানে ওপেনার সাইফ হাসান সুনীল ধামালার বলে এলবিডব্লিউ হন। এরপর পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেখ দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ৪৬ রান। তবে, ভুল বুঝাবুঝিতে পিনাক সাজঘরে ফিরে গেলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। পিনাক ৫৪ বলে দুই বাউন্ডারিতে করেন ৩২ রান। দলীয় ৭৫ রানে এই আসরের সবচেয়ে ধারাবাহিক নাজমুল হাসান শান্ত প্রেম তামাংয়ের বলে তার হাতেই ধরা পড়েন।
এরপর ৯৮ রানে জয়রাজ শেখকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সুনীল ধামালা তুলে নিলে প্রথমবারের মত দেখা সেমিফাইনালের স্বপ্নও ফিকে হতে বসে। ৬৭ বলে ৪টি চারে জয়রাজ করেন ৩৮ রান।
তবে, সব শঙ্কা দূরের দায় নিজ কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সঙ্গে পান জাকির হাসানকে। দুজনের অপরাজিত ১১৭ রানের জুটি বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তোলে। পুরো দেশ মাতে আনন্দে।
জাকির ৭৫ রানের ইনিংস সাজান ৫ চার ও এক ছক্কায়। বিজয়ী রানটি আসে তার ওই একমাত্র ছক্কাতে। আর মিরাজ ৫৫ রানের পথে মারেন ৩টি বাউন্ডারি। সঙ্গে এক উইকেট তাকে এনে দেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
যুব বিশ্বকাপে আগের তিনবারই বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে। তবে, গ্রুপপর্বে টানা তিন ম্যাচে দাপুটে জয়ে সেই সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন মিরাজরা, যারই বাস্তবায়ন হলো শুক্রবার।