বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ(এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতার পাশাপাশি নিজেদের ‘ঘর গোছানো’ গুরুত্বপূর্ন। পণ্যের উৎপাদনশীলতা ও বহুমুখীকরণ করতে হবে। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোতে সংস্কার করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম(ইআরএফ) আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব এসব কথা বলেন। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার(ডাব্লিউটিও) আসন্ন মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনকে সামনে রেখে ইআরএফ এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
উল্লেখ, আগামী ২৯ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে শুরু হচ্ছে চারদিনব্যাপি ডাব্লিউটিওর ১২তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। যাকে বলা হচ্ছে এমসি-১২। কর্মশালায় এমসি-১২তে বাংলাদেশ কোন কোন বিষয় উত্থাপন করবে, কী ধরনের ফলাফল আশা করছে, দরকষাকষির পদ্ধতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়।
রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক কারিগরি অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।
বাণিজ্য সচিব বলেন, ২০২৬ সালের পরেও বাংলাদেশ এলডিসি সুবিধা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আসন্ন ডাব্লিউটিও সম্মেলনে উত্তরণের পরে ৬ থেকে ৯ বছর একই বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকে সে বিষয়ে এলডিসি দেশগুলো একমত হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এ বিষয়ে ইতিবাচক ঘোষণা আসবে। যদি কোনো কারণে ঘোষণা না আসে, তাহলে বাংলাদেশ এই আলোচনা জিইয়ে রাখবে। অন্যদিকে জিএসপি সুবিধা, ট্রিপস, মেধাসত্ত্ব, মৎস খাতে ভর্তূকি নিয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে টিকে থাকা নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত নয়। বিশে^র যেসব দেশের বাজারে প্রতিযোগিতা করে পণ্য রপ্তানি করতে হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ ভালো করছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারতের বাজারে রপ্তানিতে ইতিবাচকক অগ্রগতি দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। এটা বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির জায়গা। এরপরও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজারস যেমন জিএসপি, জিএসপি প্লাস, ট্রিপস এর সুবিধাগুলো চাইবে। এসব সুবিধা না থাকলে বড় বাণিজ্য অংশীদারদেও সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করা হবে।
বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইইউ জিএসপির নিয়মে যে পরিবর্তন আনছে সেখানেও বাংলাদেশের জন্য অনেক ইতিবাচক ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সমস্যা হবে না। এছাড়া ট্রিপসের আওতায় ওষুধের মেধাসত্ত্ব সুবিধা যাতে বাংলাদেশ পায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া আগামী রপ্তানি নীতিও এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই করা হচ্ছে।
কারিগরি অধিবেশনে ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, এবারের ডাব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অন্যান্য অনেকগুলো দেশ বাংলাদেশের প্রস্তাবকে সমর্থন করছে অথবা একই ধরনের প্রস্তাব দিচ্ছে।
মোস্তফা আবিদ খান সমঝোতা ও দরকষাকষির পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন।