হাজার মাইল দূরে অবস্থান করলেও যে জন্মভূমির অসহায় মানুষের কল্যাণার্থে ভূমিকা রাখা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছেন প্রিসিলা।তিনি অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় মানুষেদের সাহায্য-সহযোগিতা করছেন।
প্রিসিলা তার পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন লাইভ প্রোগ্রামের আয়োজন করে থাকেন।তিনি এই প্রোগ্রামগুলোতে প্রবাসীদের দু:খ-কষ্টের গল্প শোনেন।তাদেরকে মোটিভেটেড করেন। তিনি তরুণ সমাজকে হতাশা থেকে বেরিয়ে এসে সফল হওয়ার দিক নির্দেশনামূলক তথ্য প্রদান করেন। তার লাইভ প্রোগ্রামগুলোতে দেশের স্বনামধন্য ব্যাক্তিরা অংশগ্রহণ করে থাকেন।
আমেরিকার নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত অনলাইনে একটি পরিচিত নাম ফাতিমা নাজনীন প্রিসিলা। তিনি একজন সফল ব্লগার এবং ইউটিউবার। তাঁর চ্যানেল ও পেজে প্রিসিলা নামটি ব্যবহার করেন। এজন্য তিনি লাখ লাখ ভক্তের কাছে প্রিসিলা নামেই পরিচিত।
বাংলাদেশের কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন প্রিসিলা।তাঁর পূর্বপুরুষরা সবাই কুমিল্লার। পরিবারের অনেকেই এখনো কুমিল্লায় থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাবা চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থ-প্রণেতা এবং একটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা। তাঁর মা একটি কোম্পানির ম্যানেজার। প্রিসিলা স্কুলে নাচ, গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন পুরস্কারও অর্জন করেছেন।
তিনি জানান, তার জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে মাদার তেরেসার কিছু গল্প, কিছু কথা। তাছাড়া প্রিন্সেস ডায়ানার জীবনীও অনুপ্রাণিত করেছে তাকে । তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে আসেন ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে। তিনি নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চান সামাজিক কাজকর্ম নিয়ে।
তিনি বলেন, `ক্ষুধার্ত মানুষের কষ্ট সহ্য করতে পারি না। সহ্য করতে পারি না অসুস্থ মানুষের কষ্ট। নিজে তেমন কিছু করতে পারি না, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি।’
নিউইয়র্কে প্রিসিলা বর্তমানে সাংবাদিকতা ও রাজনীতি বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছেন।তিনি আইন বিষয় নিয়েও পড়তে চান।
প্রিসিলা বলেন,‘পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং অনেক অপরিচিত মানুষ বিভিন্নভাবে আমায় সহযোগিতা করেন। অনেকে মনে করেন, আমি অনেক টাকা উপার্জন করি। তাই খরচ করি। বিষয়টা এমন নয়।’
প্রিসিলা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এখন পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে ২১টিরও বেশি হুইল চেয়ার জনস্বার্থে বিতরণ করেছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ৩০টিরও বেশি টিউবঅয়েল বসাতে সহায়তা করেছেন।
প্রিসিলা তার জন্মস্থান বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে ভীষণ মিস করেন। প্রিসিলা বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামী বছর যাওয়ার ইচ্ছে আছে। দেশে গিয়ে কিছুদিন সবচেয়ে গরীব মানুষগুলোর সাথে কাটাব। সেখানে এতিমদের এবং বৃদ্ধাশ্রমে সময় দেব।’
সানবিডি/ফাহমিদ জামান