মেলার পঞ্চম দিন শুক্রবার। একে তো ছুটির দিন। তারপর যোগ হয়েছে শিশুপ্রহর। সঙ্গত কারণেই সকাল থেকেই শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখরিত মেলার দুই প্রাঙ্গণ। অনুকূল আবহাওয়া, অভিভাবকের বাড়তি আদর-স্নেহ ও প্রকাশকের প্রস্তুতি সবমিলে মেলা যেন উৎসবে রূপ নেয়।
বিগত বছরগুলোতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ছিল শিশুকর্নার। কিন্তু এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশুদের প্রাণের মানুষ রোকনুজ্জামান দাদাভাই চত্বরে শিশুকর্নার করা হয়েছে। অনেক অভিভাবক ও শিশু না জেনেই সকাল ১১টা থেকে বাংলা একাডেমির প্রবেশদ্বারে ভিড় করে। বই কেনা-বেচা, শিশুদের জন্য সাজানো নানাবিধ উপকরণের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা আর মেলা প্রাঙ্গণে দিগ্বিদিক ঘুরে বেড়ানোই ছিল সকালের মূল চিত্র।
শুক্রবারে শিশুদের জন্য ছিল আরেক আয়োজন। সারা বাংলার শিশুদের প্রিয় সিরিজের প্রিয়-চরিত্র ইকরি, টুকটুকি ও হালুমের উপস্থিতি। জনপ্রিয় এ চরিত্রের শরীরিক উপস্থিতিই শুধু নয় তারা শিশুদের সঙ্গে নেচে-গেয়ে-কথা বলে প্রথম শিশুপ্রহরটি উচ্ছ্বাসমুখর করে রাখে। শিশুদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, তাদের চোখে-মুখে দেখা যায় বিরক্তির ছাপ। যেন আজ কোনো কথা নয়, আজকের দিনটি শুধুই আনন্দের, উচ্ছ্বাসের এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানোর।
মেলায় আগত কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা জানান, পুরো একটি বছর এ মেলার জন্য শিশুরা অপেক্ষা করে। আমরাও করি। আমাদের পছন্দের বই কিনি। তবে ওদের হাতে বই তুলে দিয়ে তারপর নিজের কথা ভাবি।
মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে জান্নাত ফেরদৌস নিয়ে এসেছেন তার খালাতো বোন তাজরিয়ানকে। দু’জনের মধ্যেই দেখা গেছে যারপর নাই আনন্দের ছাপ।
জান্নাত বলেন, ‘একদিন আমাদেরও অভিভাবকরা নিয়ে আসতেন মেলায়। মেলাকে কেন্দ্র করে ছোটবেলার কত স্মৃতি আমাদের! এ ধরনের সুন্দর স্মৃতি আমাদের পরের প্রজন্মকে উপহার দিতেই এখানে নিয়ে আসা।’
এদিকে স্টলে স্টলে বিশেষ করে শিশুকর্নারের স্টলে ছিল কেনা-বেচার ধুম। ঝিঙেফুল, সিসিমপুর, প্রগতি, ঘাসফড়িং, ঝিনুক প্রভৃতি স্টলের বিক্রেতারা জানান, সকাল থেকেই বই বিক্রি শুরু হয়েছে। শিশু প্রহরের পুরো সময়ই একইভাবে চলে। শিশু প্রহর শেষ হয় দুপুর ২টায়।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ