বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদক দেশগুলোতে কয়েক ধাপে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হওয়ায় দেশগুলোর গম উৎপাদন ও রফতানি সম্ভাবনা কমে গেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটিসহ কয়েক ডজন বৈশ্বিক আমদানিকারক উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ গম সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছেন। এসব গম রুটি, নুডলসসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়।
যেসব ব্যবসায়ী উচ্চমানের গম বিক্রি করেন, তারা বর্তমানে বিকল্প উৎসের মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে ক্রেতারা খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। বিষয়গুলো কৃষিপণ্যটির দাম কয়েক বছরের সর্বোচ্চে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
সর্বশেষ উৎপাদন ঘাটতি দেখা দেয় অন্যতম শীর্ষ দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। চলতি মৌসুমে দেশটি রেকর্ড ৩ কোটি ৪৪ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখেছিল। কিন্তু অপর্যাপ্ত ও বিলম্বিত বৃষ্টিপাতের কারণে সে আশায় গুড়ে বালি। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে কমছে প্রোটিন লেভেলও।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় খাদ্যশস্য সরবরাহকারী এক ব্যবসায়ী জানান, শীর্ষ রফতানিকারক রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বিশ্ববাজার অনেকাংশেই নির্ভরশীল। কিন্তু এসব দেশের নেতিবাচক উৎপাদন পরিস্থিতির কারণে কয়েক সপ্তাহজুড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। আপনি উচ্চ মানসম্পন্ন গমের ক্রয়াদেশ দিয়ে থাকলেও বাস্তবে কী পাচ্ছেন, তা নিয়ে কিন্তু অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার নিম্নমানের সাদা গম ও প্রিমিয়াম সাদা গমের দামের পার্থক্য দাঁড়ায় টনপ্রতি ৪৭ ডলারে। অথচ কয়েক মাস আগেও দামের ব্যবধান ছিল ৮-১০ ডলার। বিষয়টি অসম গুণগত মানের দিকেই ইঙ্গিত করছে।
গমের বাজারের এ উদ্বেগ সারা বিশ্বেই অনুভূত হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় গত মাসে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ গমের দাম নয় বছরের সর্বোচ্চে উন্নীত হয়। এ সময় বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক রাশিয়া ও চতুর্থ রফতানিকারক অস্ট্রেলিয়ায় পণ্যটির দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে উঠে আসে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানায়, অক্টোবরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম এক দশকের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বাজারের এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে গম এবং অন্যান্য খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেলকে।
সানবিডি/এনজে