চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বিশেষ সুবিধার আওতায় ১১২ কোটি কালো বা অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ বা সাদা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০ কোটি টাকা নগদ, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র এবং অন্যান্য আর্থিক খাতে বিনিয়োগ দেখিয়ে বৈধ করা হয়েছে। আবাসন খাত ও শেয়ার বাজারে বাকি টাকা বিনিয়োগ করে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে ১৫০ ব্যক্তি এমন সুবিধা নিয়ে কর হিসাবে ১২ কোটি টাকার কিছু বেশি সরকারের কোষাগারে জমা দিয়েছেন। গত বছরের একই সময়ে টাকা বৈধ করার পরিমাণ ছিল ৫৫০ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বলছে, এই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কালোটাকা সাদা করেছেন ১২২ জন। পরের দুই মাসে কালো টাকা সাদা করেছেন মাত্র ২৮ জন।
প্রসঙ্গত, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বৈধ হয়। প্রায় ১২ হাজার করদাতা তাদের টাকা বৈধ করেন। কালো টাকা সাদা করার তালিকায় আছেন ডাক্তার, সরকারি চাকরিজীবী, তৈরি পোশাক রফতানিকারক, ব্যাংকের স্পন্সর-ডিরেক্টর, সোনা ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকে। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ঘোষিত টাকা থেকে সরকার কর পেয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে প্রযোজ্য করহার এবং তার সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। কেউ এই শর্ত মেনে সরকারের দেওয়া এ সুযোগ গ্রহণ করলে এনবিআরসহ অন্য কোনও গোয়েন্দা সংস্থা তার আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন করবে না।
এর আগের অর্থবছরে শেয়ারবাজার, নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, সঞ্চয়পত্র, জমি ক্রয়ে শুধু ১০ শতাংশ কর দিয়ে ঢালাওভাবে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ নতুন নিয়মে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা হলেও শর্ত কঠোর করা হয়েছে।
এবারের বাজেটের বাইরে আরও তিনটি খাতে (আগে থেকেই) কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ বহাল রয়েছে। সেগুলো হলো ১০ শতাংশ কর দিয়ে হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করলে আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন করা হবে না, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগে একই সুবিধা দেওয়া রয়েছে। এ ছাড়া সিটি ও পৌর করপোরেশনের মধ্যে এলাকাভেদে ফ্ল্যাটে প্রতি বর্গমিটারে নির্ধারিত কর দিয়ে টাকা বৈধ করা যায়।
এএ