কর প্রক্রিয়া সহজ করার কথা জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, কর দেওয়ার প্রক্রিয়া যত সহজ হবে, জনগণ ততই কর দিতে উৎসাহ পাবেন। কর ফাঁকির প্রবণতাও কমে আসবে।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ট্যাক্স গাইড ২০২১-২২ এর মোড়ক উন্মোচনের সময় তিনি এমন মত দেন। এ সময় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং এনবিআর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআই প্রতিবছর ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও ব্যক্তি পর্যায়ে ট্যাক্স দিতে উৎসাহী করতে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের পরপরই ট্যাক্স গাইডটি প্রকাশ করে থাকে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর দেওয়ার প্রক্রিয়া যত সহজ হবে, দেশের জনগণ ততই কর প্রদানে উৎসাহীত হবেন এবং কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমে আসবে। জাতীয় বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ডিসিসিআই প্রতিবছরই তাদের সুচিন্তিত প্রস্তাবনা পেশ করে থাকে। এছাড়াও দেশের সার্বিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং এনবিআরের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ‘টেকনিক্যাল, ‘গবেষণা’ এবং ‘বিজনেস প্রসেস’ প্রভৃতি খাত ভিত্তিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে মতামত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ঢাকা চেম্বার নিয়মিতভাবে ট্যাক্স গাইড প্রকাশ করে আসছে, যা আয়কর দেওয়াদের বিশেষ সহযোগিতা দেয় এবং এ ধরনের উদ্যোগের জন্য তিনি ডিসিসিআইকে ধন্যবাদ জানান। কর হার কমানো, সেবার মান উন্নয়ন এবং কর প্রক্রিয়া অটোমেশনের জন্য এনবিআর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যার সুফল দেশের ব্যবসায়ী সমাজসহ সাধারণ জনগণ ভোগ করবে।
আগামী ২০ বছরের প্রয়োজনের নিরিখে এনবিআরে দক্ষ জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে একটি কাঠামো প্রণয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমাজকে কর দিতে উৎসাহিত করার জন্য বিদ্যমান করনীতিমালা সহজ করা প্রয়োজন এবং দেশে একটি করবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এনবিআরের সঙ্গে ঢাকা চেম্বার একযোগে কাজ করছে, যা আগামীতে অব্যাহত থাকবে। শতবর্ষ পুরোনো ‘আয়কর আইন’ সংশোধন ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে এনবিআর নিরলসভাবে কাজ করছে এবং আশা করছি সকলের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত হলে, তা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, দেশের মোট জিডিপি প্রায় ৮০ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত থেকে এবং দেশের উন্নয়নে এখাতের ভূমিকা আরো সুদৃঢ় করার জন্য ব্যবসা সহায়ক নীতিমালার কোনো বিকল্প নেই। দেশীয় বিনিয়োগের সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুততম সময়ে সামগ্রিক কর কাঠামোর আমূল সংস্কার ও যুগোপযোগী করার কোনো বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে এনবিআরকে আরো বেশি হারে মানোনিবেশ করা প্রয়োজন।
কর সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা দিতে ঢাকা চেম্বার দীর্ঘদিন থেকে এ গাইডটি প্রকাশ করে আসছে। গাইডটিতে বিভিন্ন শিডিউল এবং এসআরও এর তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে, যা ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্স কোম্পানি এবং অন্যান্য ব্যবসায় সংগঠনগুলোকে বিশেষভাবে সহায়তা করবে বলে অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়।
এএ