তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার পর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ উড়োজাহাজে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানান।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ও মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আয়োজনে অংশ নিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে গত বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রথমবারের মতো সস্ত্রীক ঢাকায় পৌঁছান ভারতীয় রাষ্ট্রপতি। ওইদিন বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কোবিন্দকে স্বাগত জানান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে লালগালিচা অভ্যর্থনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সফরের প্রথম দিনই মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যান ভারতের রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া একটি চারাগাছ রোপণ ও দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন। স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।
ওইদিনই বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ভারতীয় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রপতির বৈঠক ও দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির আয়োজনে নৈশভোজে অংশ নেন রামনাথ কোবিন্দ ও শেখ হাসিনা।
সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে যোগ দেন। বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিয়ে ভাষণ দেন রামনাথ কোবিন্দ। ভাষণে তিনি বাংলাদেশের চমৎকার অর্থনৈতিক সাফল্য বিশ্বকে উপকৃত করতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
সফরের তৃতীয় তথা শেষ দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ ও মেয়ে স্বাতী কোবিন্দকে নিয়ে রমনা কালী মন্দিরে আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। এসময় তিনি মন্দিরের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন। পরে পূজা অর্চনা, প্রার্থনা শেষে মন্দির কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এদিন রমনা কালী মন্দির প্রাঙ্গণে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক।
এএ