দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখন সহজেই দেখা মিলে শামুকখোল পাখির।দুই দশক আগেও সচরাচর এদের দেখা মিলত না। উপযুক্ত পরিবেশ, পর্যাপ্ত খাবার ও প্রজনন সুবিধার কারণে এই পাখির দেখা মিলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শামুকখোল এখন দেশের বিভিন্ন খাল-বিল এবং নদীর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে। এরা প্রজনন শেষে আর দেশের বাইরে যাচ্ছে না। ফলে দেশের আনাচে-কানাচে সহজেই এ পাখির দেখা পাওয়া যাচ্ছে।
শামুকখোল এশিয়া মহাদেশের আদি প্রজাতির একটি পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম (Anastomus oscitans) শামুকখোল বা শামুকভাঙ্গা (Ciconiidae) সাইকোনিডি গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত (অ্যানাস্টোমাস) এক প্রজাতির শ্বেতকায় বৃহদাকৃতির পাখি। সিলেট অঞ্চলে শামুকভাঙ্গা নামে পরিচিত।
বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, ‘শামুকখোল পাখি মূলত আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালীন সময়ে আসতো। এজন্য এদের পরিযায়ী পাখি বলা হতো। কিন্তু এখন এরা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। তাই এদের দেশীয় পাখি হিসেবে গণ্য করা হয়।’
মৌলভীবাজারের কাওয়াদীঘি হাওর পাড়ের বাসিন্দা মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের হাওড়-বিল ঝিল, নদী-নালায় শামুকখোল কলোনি স্থাপন করেছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে বাধাহীনভাবে শামুকখোল এখন উন্মুক্ত আকাশে উড়ছে।’
এছাড়াও সিলেটের টাঙ্গুয়ার হাওর, হাকালুকি ও কাওয়াদীঘি এলাকায় এখন শামুকখোল দলে দলে প্রজনন করছে। সৌখিন শিকারিরা মাঝে মাঝে বন্দুক দিয়ে শিকার করায় এরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘এ পাখির ঠোঁটের সঙ্গে অন্য কোনো পাখির ঠোঁটের মিল নেই। শামুকখোল পাখির ঠোঁটের নিচের অংশের সঙ্গে ওপরের অংশে বড় ফাঁক। এরা এ বিশেষ ঠোঁটে শামুক তুলে চাপ দিয়ে শামুকের ঢাকনা খুলে ভিতরের নরম অংশ খেয়ে নেয়। মূলত শামুকের ঢাকনা খোলার শৈল্পিক কৌশলের কারণেই এ পাখির নাম করণ করা হয়েছে শামুকখোল পাখি।’
সানবিডি/এনজে