জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সব চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন স্বাথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
মঙ্গলাবর (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনারা আশস্ত থাকুন এ ভাইরাস আমাদের দেশে কোনোভাবে সংক্রামিত হতে পারবে না। সরকার জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে।’
দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকাসহ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ৩০টি দেশসহ ইউরোপ ও এশিয়ার কয়েকটি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিকভাবে জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে। এর ফলে বাংলাদেশে সরকার জিকার রোগী সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক রুটে মেডিকেল টিমের কার্যক্রম নিশ্চিত করেছে।
শাহজালাল বিমান বন্দরে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীর জিকা ভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটর করার জন্য ওয়েব ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
এছাড়া এডিস মশা যেহেতু জিকা ভাইরাস বহন করে, তাই এ মশা নিধনের ব্যবস্থা করছে সরকার।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকায় বিশেষ করে ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে কারণ এতে করে অপরিণত মস্তিষ্কবিশিষ্ট শিশুর জন্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব শিশু সারাজীবন প্রতিবন্ধী হয়ে বেঁচে থাকে অথবা অপরিণত বয়সে মারা যায়।
জিকা ভাইরাস আবিষ্কৃত হয় ১৯৪৭ সালে। এটি একটি মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস সমগোত্রীয় RNA ভাইরাস।
২০১৫ সালে জিকা ভাইরাস মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি প্রথম ধরা পড়ে ব্রাজিলে। শুধু অক্টোবর ২০১৫ থেকে জানুয়ারি ২০১৬ পর্যন্ত ব্রাজিলে ৩৫০০ ছোটমাথার শিশু জন্মগ্রহণ করেছে যাদের মস্তিষ্কের একটি বড় অংশ তৈরিই হয়নি। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ ধরনের শিশুর সংখ্যা আরো বাড়বে।
রোগটি মশাবাহিত হওয়ায় তা খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকাতে শুরু হয়ে মধ্য ও উত্তর আমেরিকার কিছু অংশে (মেক্সিকো, আমেরিকা, কানাডা) ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে জিকায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
এছাড়াও জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতেও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউরোপেও প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এক গর্ভবতী নারীর শরীরে জিকা ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্পেন।
সানবিডি/ঢাকা/জেএইচ/এসএস