ইন্দোনেশিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় সরবরাহ ঠিক রাখতে কয়লা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশের জ্বালানি খাতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগেরই জ্বালানি পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানিতে গুরুত্ব দিয়ে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ইন্দোনেশিয়ার দুয়ার বন্ধ হয়ে গেলে প্রয়োজনে বিকল্প বাজার থেকে কয়লা আমদানি করা হবে।
এ মুহূর্তে বড় এক অস্থিতিশীল সময় পার করছে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার। বিশেষ করে এলএনজিসহ প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক পণ্যগুলোর মূল্য পরিস্থিতি আমদানিকারক দেশগুলোকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। বিপাকে পড়েছে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতও।
জাতীয় গ্রিডে প্রয়োজনীয় মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। সারা দেশে বর্তমানে গ্যাস সংকটে দুই হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। টেকসই উৎস নিশ্চিত না করে শুধু এলএনজি আমদানির মাধ্যমে এ সংকট মোকাবেলা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় নির্ভরতা বেড়েছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর।
গত এক দশকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পগুলোর মধ্যে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র এরই মধ্যে উৎপাদনে এসেছে। মূলত ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত কয়লার ওপর নির্ভর করেই চলছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কার্যক্রম। আগামী মার্চে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রেরও উৎপাদন কার্যক্রম ইন্দোনেশিয়া থেকে সরবরাহকৃত কয়লার মাধ্যমেই চালানোর কথা রয়েছে।
প্রকল্পের সংশোধিত তথ্য অনুযায়ী, গত মাসেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে কভিডের কারণে তা কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রকল্পটির কার্যক্রম আর বিলম্বিত করতে চাইছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। যদিও ইন্দোনেশিয়ার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত রামপালে সময়মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা নিয়ে বড় ধরনের সংশয় তৈরি করেছে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাত ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত কয়লার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হলেও দেশটির নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়ে এ মুহূর্তে খুব একটা দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ইন্দোনেশিয়া কয়লা রফতানি বন্ধ করলেও সেটি সাময়িক সময়ের জন্য। তার পরও আমরা বিভিন্ন দেশের কয়লা আমদানি নিয়ে কথা বলে রেখেছি। যদি কয়লা আমদানির এ উৎস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বিকল্প হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া আমাদের জন্য খোলা রয়েছে।
তবে বিকল্প বাজার থেকে আমদানি করা হলেও কয়লার গুণগত মান নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সানবিডি/এনজে