করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ঠেকাতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। সাত দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ওমিক্রন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং করণীয় নির্ধারণে আন্তমন্ত্রণালয় সভার পরের দিন মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেবিনেটের সঙ্গে গতকাল (সোমবার) মিটিং করেছি। বেশ কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এগুলো এখনও ফাইনাল না। কেবিনেট থেকে এগুলো ফাইনাল করা হবে। করোনাভাইরাস রুখতে হবে, এ কারণেই এ সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হচ্ছে।’
কেবিনেট থেকে কী কী প্রস্তাব এসেছে, এমন প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যানবাহনে মাস্ক ছাড়া চলাচল করা যাবে না। যারা চলাচল করবেন তাদের জরিমানার মধ্যে পড়তে হবে। পরিবহনের মধ্যে বাস থাকবে, ট্রেন থাকবে এবং লঞ্চ থাকবে।
‘একটা সিদ্ধান্ত মোটামুটি হয়েছে, আমাদের প্রস্তাবনায় রয়েছে। যাত্রী সংখ্যার ব্যাপারে বলা হয়েছে, বাস ও অন্যান্য যানবাহনে অর্ধেক নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও দোকান-পাটের ব্যাপারেও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট-হোটেল সেখানেও মাস্ক পরে যেতে হবে। মাস্ক ছাড়া গেলে দোকানদারেরও ফাইন হবে, যে যাবে তারও ফাইন হবে। দোকান খোলা রাখার সময়সীমাও কমিয়ে আনা হয়েছে, ১০টার পরিবর্তে রাত ৮টা পর্যন্ত করা হয়েছে। এটাও প্রস্তাব করা হয়েছে।’
‘ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে ভ্যাকসিন কার্ড দেখাতে হবে।’
চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান অব্যাহত রাখা হবে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘স্কুল চলবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। সংক্রমন বেশি বৃদ্ধি পেলে স্কুলের বিষয় চিন্তাভাবনা করা হবে যে এটাকে চালানো যাবে কি না। এখনও আমরা সে সিদ্ধান্ত নেইনি, সে পরিস্থিতি এখনও বিরাজ করছে না।’
ফের লকডাউন দেয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে জিজ্ঞেস করেন লকডাউন দেয়া হবে কি না, পাশের দেশে তো দিয়েছে। আমরা এখনও সে চিন্তা করছি না। যদি পরিস্থিতি হাতের বাহিরে চলে যায়, সংক্রমণ অনেক বৃদ্ধি পায় তাহলে লকডাউনের চিন্তা মাথায় আছে।’
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সীমান্ত অঞ্চলে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেন, কোয়ারেন্টিনে যারা থাকবে তারা যাতে বাহিরে ঘোরাফেরা না করে এজন্য পুলিশ পাহারা বসানো হবে।
এসব নির্দেশনা কবে নাগাদ বাস্তবায়ন করা হবে, এমন প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ডিসি-এসপিদের বলা হয়েছে, তারা এ নির্দেশ যখন পাবেন তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করেন। আগে ১৫ দিন সময় দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। আজ প্রপোজ করেছি ১৫ দিন নয়, ৭ দিন দেয়ার জন্য। এটা কেবিনেট সচিবকে বলা হয়েছে, তিনিও একমত পোষণ করেছেন। এটা সাত দিন পরেই নির্দেশগুলো বাস্তবায়ন কার্যকর শুরু হবে।’
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগের কথাও জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে পৃথিবীতে ওমিক্রন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশের দেশেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও কিছু রোগী পাওয়া গেছে, যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত।
‘আমরা লক্ষ্য করছি, সপ্তাহখালেক ধরে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। গত ১০ দিন আগেও এটা ২০০ থেকে আড়াই শ’র মধ্যে ছিল। গতকাল এটা পৌনে ৭ শ হয়ে গেছে। যেভাবে বাড়ছে এটা আশঙ্কাজনক।’
এএ