পুঁজিবাজার থেকে দেশের অর্থনীতিতে অবদান বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী টানতে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। সংস্থাটি মনে করে পুঁজিবাজারকে সার্বজনিন করতে পারলে দেশের মানুষ উন্নতি ও দেশের শিল্পায়ন আরও সহজে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ফলে এবার সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে সহজে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ দেওয়ার সুযোগ দিতে কাজ করছে বিএসইসি। এরই ধারা বাহিকতায় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে কাজ করছে বর্তমান কমিশন।
বর্তমানে দেশে সম্ভাবনাময় অনেকগুলো স্টার্টআপ কোম্পানি কাজ করছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভালো করছে। যদিও অনেক কোম্পানি এখনো লাভের মুখ দেখেনি। অন্যদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের সম্ভাবনা থাকলে অর্থের অভাবে মুখ থুবরে পড়ছে। সম্ভাবনা আছে,লোকসানও করছে, টাকাও নেই সামনে এগিয়ে নেওয়ার। এমন সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে বিএসইসি। সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসানে থাকলেও পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবে।
ইতোমধ্যে বিএসইসি (ক্ষুদ্র মূলধন কোম্পানির মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারী অফার) বিধিমালা, ২০১৮ সংশোধন করার জন্য কাজ করছে। যেসব প্রতিষ্ঠন লোকসানে, তবে সম্ভাবনা আছে এমন স্টার্টআপগুলোকে পুঁজিবাজারে আসতে নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ।
বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর অনেক সম্ভাবনা রযেছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি কোম্পানি বেশ ভাল করছে। তবে এখনও মুনাফা করতে পারছে না। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে যাদের বেশি সম্ভাবনা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে কাজ করছে বর্তমান কমিশন।
তিনি বলেন, স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকে এখনও লোকসান গুনছে। তবে এদেরে মধ্যে বিকাশ ও দাড়াজের মত কিছু প্রতিষ্ঠান ভাল করছে। এই সব প্রতিষ্ঠানের অনেক সম্ভাবনা।
শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান আইনে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে মুল্যায়ন করা সম্ভব নয়। এজন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। আমরা নতুন আইন তৈরি করতে কাজ করছি। যাতে আইনের মধ্যে থেকে এসব প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে মুল্যায়ন করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানত যে কোন কোম্পানির মুল্যায়ন নির্ভর প্রতিষ্ঠনটির আর্থিক প্রতিবেদন সহ সম্ভাবনা কতটুকু এর উপর ভিত্তি করে। তবে প্রযুক্তি চালিত কোম্পানিগুলোর মূল্যয়ন সহজ কাজ নয়। কারন এসব প্রতিষ্ঠানের কাজ স্বচক্ষে দেখার সুযোগ কম। নতুন আইন তৈরি করা একটি কঠিন কাজ। কারণ আমাদের এমন আইন করতে হবে যাতে আইনের মধ্যে থেকে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর সম্পদের মুল্যয়ন করা যায়। তবে স্টার্টআপ কোম্পানির নির্ভরযোগ্য আর্থিক নথি খুঁজে পাওয়া নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
শামসুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, একটি স্টার্টআপ কোম্পানির অতীতের কাজের অভিজ্ঞতা, কোম্পানির উন্নয়ে দীর্ঘ্য মেয়াদী পরিকল্পনা, ভবিষ্যত সম্ভাবনা, বাজারে কোম্পানির পণ্যে কতটুকু শেয়ার রয়েছে এবং বিনিয়োগকৃত সম্পদ থেকে কেমন আয় হচ্ছে তা দেখে নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্টার্টআপ কোম্পানির মুল্যায়ন করতে পারবে। নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও স্টার্টআপ কোম্পানি কিভাবে কাজ করবে এমন পরিকল্পনা দেখেও তাদের মুল্যায়ন করতে পারবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যদিও একটি স্টার্টআপ কোম্পানির জন্য দীর্ঘ্য সময়ের জন্য অনুমান বা ধারনা অনেকাংশ ইতিবাচক নাও হতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে সফ্টব্যাঙ্ক ভিশন ফান্ড বিকাশের ১০ শতাংশ শেয়ার নেয়ার জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করতে চাচ্ছে। কোম্পানিটির এমন উদ্যোগের ফলে স্টার্টআপ কোম্পানির মূল্যায়ন প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি করবে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন