বাংলাদেশি সামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা যেতে পারবেন যুক্তরাজ্য।করোনায় দেশটিতে পরিচর্যাকর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এজন্য সারা বিশ্ব থেকে ৩০ হাজার পরিচর্যাকর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। আর এতেই বাংলাদেশি পরিচর্যাকর্মীদের অস্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে কাজ করতে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে ঠিক কতজন কর্মী যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে নেবে তা এখনও নিশ্চিত করেনি। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর এসএম জাকারিয়া হক গত ৪ জানুয়ারি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান ই এলাহীকে বাংলাদেশি কিছু স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে যুক্তরাজ্যে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার বিভাগের সচিব এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেসকেও (উএঐঝ) একই চিঠি দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্য সরকার গত ২৪ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় বলা হয়, অস্থায়ীভাবে বিদেশি পরিচর্যাকারীদের জন্য অভিবাসন নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে, যাতে তাদের যুক্তরাজ্যের হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োগ করা যায়।
এ বিষয়ে হাইকমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনার কারণে পরিচর্যাকর্মী সঙ্কট দেখা দেওয়ায় দেশটি ১২ মাসের জন্য সোশ্যাল কেয়ার ওয়ার্কার, কেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং হোম কেয়ার ওয়ার্কার নেবে। একজন কর্মীর বার্ষিক বেতন হবে ন্যূনতম ২০৪৮০ স্টার্লিং পাউন্ড বা ২৭৪৪৫ ডলার। আবেদনকারীদের জন্য ভিসা ফি ছাড় দেওয়া হবে, ফাস্ট ট্র্যাকের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন। শুধু পরিচর্যাকর্মীরা নয় সপরিবারে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। যারা ৩ বছরের ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের ভিসা ফি হবে ২৩২ ডলার। যারা ৩ বছরের বেশি ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের ভিসা ফি হবে ৪৬৪ ডলার। ৫ বছর থাকার আগে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করতে পারবেন না। সর্বনিম্ন ১২ মাসের জন্য এটি কার্যকর হবে। অস্থায়ী ব্যবস্থাগুলো পরের বছরের শুরুতে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বাংলাদেশি পরিচর্যাকর্মীদের জন্য বিরল সুযোগ। তবে আবেদনকারীকে সেখানে করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশি সামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা যুক্তরাজ্যে কাজ করার একটি বিরল সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে কারণ সেখানকার সরকার কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে তাদের অসুস্থ নাগরিকদের যত্ন নেওয়ার জন্য অস্থায়ীভাবে কাজের ভিসার শর্ত শিথিল করেছে।
যুক্তরাজ্য সরকার এই কর্মীদের জন্য ‘ওয়ার্কফোর্স রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড রিটেনশন ফান্ড’ নামে ৪৬২.৫ মিলিয়ন ডলারের একটি ভিসা তহবিল বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্য এবং পরিচর্যা ভিসার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানা যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সারা বিশ্ব থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার পরিচর্যাকর্মী নেবে। এই ভিসায় যুক্তরাজ্যে যেতে ইচ্ছুক প্রার্থীকে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। তাকে ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫ স্কোর করতে হবে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবটি আমরা দেখে বিস্তারিত জানাব।
সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানা গেছে, কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ১৫ হাজার বাংলাদেশি নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পুরুষ ও মহিলা উভয় প্রার্থীরই আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
সানবিডি/এনজে