অর্থ পাচার ও ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে বেসরকারি সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস-প্রেসিডেন্টসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।
দুদক সূত্র জানায়, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কর্মাস ব্যাংক লিমিটেড-এর সাবেক চেয়ারম্যান এস, এম আমজাদ হোসেন- এর নির্দেশে বিজয়নগর (তৎকালীন মতিঝিল) শাখার ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে রাফি মাহি কর্পোরেশন নামের কাগুজে প্রতিষ্ঠান এবং আল-আমিন কর্পোরেশনের নামে যথাক্রমে ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ দিয়ে পরবর্তীতে তা স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলো- ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস, এম আমজাদ হোসেন, ব্যাংকটির পরিচালক ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মতিঝিল শাখার কর্মকর্তা শেখ শরফুদ্দিন, ব্যাংকের প্রধান শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ, বনানী শাখার ফার্স্ট এসিটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ রুমন-উল-ইসলাম, বিজয় নগর শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার, মোঃ তানজির উদ্দিন চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং ব্যাংকের নরসিংদীর মাধবদী শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা তাসরিমা নাহিদ এবং রাফি-মাহি কর্পোরেশনের মালিক এ, কে, এম আসিফ উদ্দিন।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনের দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় মামলা করেছেন দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।
এছাড়া ভূয়া এসওডি-ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ছয় কোটি আট লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে অপর আরেকটি মামলা করেছে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গুলশাল আনোয়ার প্রধান।
এই মামলার আসামিরা হলো- ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস, এম আমজাদ হোসেন, ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, (প্রধান কার্যালয়, লিগ্যাল এফেয়ার্স) শেখ শরফুদ্দিন, বিজয়নগর শাখার ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মো: তানজির উদ্দিন চৌধুরী, ক্রেডিট ডিভিশন-এর সিনিয়র কর্মকর্তা মো. বুলবুল ইফতেখার আলী এবং আল-আমিন কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. মাসুদুর রহমান, জামাল আহমেদকে।
তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে আমজাদ হোসেনের নামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে চিঠি দেয় দুদক। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এস এম আমজাদ হোসেন, স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ ও মেয়ে তাজরির বিদেশে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।