ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেছেন একমাত্র অটোমেশনই পারে ব্যবসা-বাণিজ্য সহ অন্যান্য খাতে সকল প্রকার দূনীতি রোধ পূর্বক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে।
রবিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘সংবাদ সম্মেলন’ তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, এ বছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, বেসরকারি বিনিয়োগ ও এফডিআই, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, সমদ্র অর্থনীতি, দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল এনগেইজমেন্ট, কর ব্যবস্থাপনা এবং এলডিসি উত্তোরণ প্রভৃতি বিষয় সমূহের উপর অধিক হারে গুরাত্বারোপ করবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, কোভিড মহামারী কারণে উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে বিশেষকরে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি আরো সহজীকরণ করা প্রয়োজন।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য আমাদের মানবম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন ডিসিসিআই সভাপতি এবং এ ব্যাপারে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে আরো বেশি হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার উপর জোরারোপ করেন।
সুমদ্র অর্থনীতিকে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, আমাদের জিডিপিতে এখাতে অবদান রয়েছে ৩.১ শতাংশ এবং এ সম্ভাবনাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর জন্য একটি কার্যকর রূপকল্প প্রণয়নে দাবী জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
রিজওয়ান রাহমান বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পর বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে, এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পাশাপাশি পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নেগোশিয়েশনের দক্ষতা আরো বাড়ানো অতীব জরুরী, সেই সাথে এফটিএ’র উপর আমাদের অধিক হারে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিশেষকরে বিদ্যমান করকাঠামোর প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও যুগোপযোগীকরণ, ক্রস-বর্ডার বাণিজ্য সম্প্রসারণে নীতি সহায়তা প্রদানের উপর জোরারোপ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে আমাদের বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ডিজিপি’র ২১.২৫ শতাংশ এবং ২০২১ সালে এডিআই’র পরিমাণ ছিল ২.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এমতাবস্থায় বেসরকারি বিনিয়োগ এবং এফডিআই বৃদ্ধিতে কর্পোরেট কর কাঠামোর সংষ্কার, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে সকল ধরনের সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
কর্পোরেট করের বিষয়ে তিনি বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পূর্বে বাংলাদেশের কর্পোরেট কর হার আঞ্চলিক দেশসমূহের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করা প্রয়োজন এবং এলক্ষ্যে তিনি বিদ্যমান কর্পোরেট কর ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যথাক্রমে ৫ শতাংশ ও ৭.৫ শতাংশ হারে ক্রমান্বয়ে হ্রাসের আহ্বান জানান।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এলডিসি উত্তোরণের পর আমাদের রপ্তানিমুখী পণ্যের উপর শুল্ক হার বর্তমানের চেয়ে ৬-৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, ফলে এখন থেকে আমাদের পণ্যের বহুমুখীকরনের সাথে সাথে বাজার সম্প্রসারণের উপর মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধিতে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের প্রতি আমাদের আরো মনোযোগী হওয়ার প্রস্তাব করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, কোভিড মহামারী থাকা সত্বেও ২০২১ সালে আমাদের বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৪৩ শতাংশ এবং পণ্য রপ্তানি, রেমিট্যান্স এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে বেশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
ডিসিসিআই উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক এবং সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এসএ/এনজে