করের আওতা বাড়াতে দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি শারমীন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম এ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির পরিধি বেড়ে যাওয়ায় গত ১০ বছরে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর প্রদানে সামর্থ্যবান হয়েছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হচ্ছে, এই মুহূর্তে দেশে করযোগ্য মানুষ অন্তত ২ কোটি। আবার কেউ বলছেন, এই সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি। করযোগ্য নাগরিকদের সংখ্যা নিয়ে এই বিভ্রান্তি দূর করতে, কিংবা দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে এনবিআরের একটি ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণা জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, দেশে ইটিআইএন-ধারীর সংখ্যা ৭০ লাখের মতো। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ২৪ থেকে ২৫ লাখ। অথচ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। রিটার্ন দাখিল না করা এ বিপুল পরিমাণ টিআইএনধারীকে কর নেটের আওতায় আনতে আইনের বাধ্যবাধতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা দরকার।’
বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৫ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশি নাগরিক কাজ করেন। কিন্তু এনবিআরে আয়কর জমা দেন মাত্র ১৪ থেকে ১৫ হাজার বিদেশি নাগরিক। দেশে কর্মরত বিদেশিরা বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যান বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে টিআইবি। বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনতে এনবিআরের উদ্যোগ আরও জোরালো করার প্রয়োজন।’
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করতে ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালানো দরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব সাইটটি আপগ্রেড করার প্রস্তাব করছি। এতে অনেক হালনাগাদ তথ্য ও পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। একইসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের গবেষণা সেলটি আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করার প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। আমাদের প্রস্তাব হলো— একজন সদস্যের নেতৃত্বে গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগকে শক্তিশালী করা যেতে পারে।’
কোনও ব্যবসায়ী যেন কর ফাঁকি দিতে না পারেন, সেজন্য এনবিআরের অটোমেশন ও কঠোর মনিটরিংয়ের সুপারিশ করেছে ইআরএফ। মুদ্রা পাচার রোধে ভারত অথবা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কঠোর আইন করা যায় কিনা, সেটা ভেবে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয় ইআরএফের পক্ষ থেকে।
এএ