ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানকার অন্তত দুটি কলেজ সোমবার বন্ধ রাখা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সংঘাত এড়াতে এই প্রদেশের আরেকটি কলেজে হিজাব পরা ছাত্রীদের আলাদা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তাদের পাঠদান করা হয়নি।
এ বিষয়ে ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্ণাটকের চিক্কামাগালুরুর আইডিএসজি কলেজে শিক্ষার্থীদের নীল ওড়না এবং গেরুয়া ওড়না পরা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। হিজাবের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করছে, সেই আরএসএসপন্থিরা গেরুয়া ওড়না পরছে। অন্যদিকে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরার প্রতি সমর্থন জানিয়ে দলিত সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা নীল ওড়না পরেছে। তাদের মতে, নীল আকাশের নিচে সব মানুষই সমান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় পরপর কয়েকটি কলেজে নিষিদ্ধ হয়েছে হিজাব। একপর্যায়ে সরকারি নির্দেশনায় জানানো হয়েছিল, প্রি ইউনির্ভাসিটির আওতায় যে সরকারি কলেজগুলো রয়েছে সেখানে কলেজ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড যে পোশাক নির্দিষ্ট করেছে সেটাই থাকবে। আর যেখানে এই পোশাক বিধি নেই, সেখানে শিক্ষার্থীরা এমন পোশাক পরতে পারেন যাতে করে সম্প্রীতি, সমতা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে।
সরকারি নির্দেশের পরও বিতর্ক থামেনি। শেষমেষ আদালতের দ্বারস্থ হয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। মঙ্গলবার হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
এমন পরিস্থিতিতে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের ভাষ্য, হাইকোর্টে হিজাব মামলার শুনানি রয়েছে আগামী মঙ্গলবার। আদালতের নির্দেশের আগে শিক্ষার্থীদের রাজ্য সরকারের পোশাক নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
হিজাব পরা নিয়ে কলেজের বাইরে ছাত্রীদের গত কয়েক দিনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর কর্ণাটকের উদুপি জেলার কুন্দপুরের সরকারি জুনিয়র পিইউ কলেজ কর্তৃপক্ষ সোমবার সকালে ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু হিজাব পরে আসায় তাদের আলাদা শ্রেণিকক্ষে বসার নির্দেশ দেওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভিন্ন শ্রেণিকক্ষে বসানো ছাত্রীদের পাঠদানও করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে কালাভারা ভারাদারাজ এম শেঠি সরকারি কলেজের হিজাব পরা ছাত্রীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সানবিডি/এনজে