নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাজারের গুনগত পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছে। একই সাথে বাজারে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একবিন্দুও ছাড় দিচ্ছে না। অন্যদিকে পুঁজিবাজার প্রসারিত করতে দীর্ঘ সময় পর নতুন ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে। দেশ-বিদেশের বিনিয়োগ আনতে কাজ করছে বিএসইসি। আমরাও বিএসইসির এই কাজের অংশীদার হতে চাই। নতুন বিনিয়োগ, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও বিদেশি বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে আনতে কাজ করতে চায় তাসিয়া সিকিউরিটিজ।
সম্প্রতি দেশের অন্যতম নিউজ পোর্টাল সানবিডির সাথে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসওয়াত আকসির মুজিব ওয়াসি।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমি নগদের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করছি। নগদ বাজারে আসার পর মোবাইল ব্যাংকিং এর ধারনা পরিবর্তন করেছে। অল্প খরচে লেনদেনের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। দেশে আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তিমুলক কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ তিনি কাজে লাগাতে চান। তিনি মনে করেন দেশের আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সবার অবস্থান থেকে কাজ করা উচিত।
তাসিয়া সিকিউরিটিজ’র চেয়ারম্যন বলেন, দেশের পুঁজিবাজার বর্তমানে সুসময় পার করছে। এখানে বিপুল সংখ্যক যুবক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর আগমন হচ্ছে। কারণ দেশের শেয়ার বাজার এখন অনেক ভাইব্রেন্ট। এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়নে তিনি কাজ করতে চান।
তিনি বলেন, যে কোন দেশের জন্য পুঁজিবাজার অর্থনীতির জন্য একটি পরিমাপক। একটি দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা দেখে সহজে অনুমান করা যায় সেই দেশের আর্থিক খাত সম্পর্কে ।
তিনি আরও বলেন, তারা দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে কাজ করতে চান। এমন ইচ্ছে থেকে ট্রেক এর জন্য লাইসেন্স গ্রহন করেছেন। লাইসেন্স নেয়ার আগে আমরা চিন্তা করেছি যে দেশের শেয়ার বাজারের জন্য কিছু করতে পারি কিনা।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
শাহজালাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, পদ্মা সিকিউরিটিজ, ন্যাশনাল ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে মুজিব ওয়াসি এর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে তিনি চেষ্টা করেছেন নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে। আর্থিক খাতে কাজের ক্ষেত্রে তার সবসময় একটি সংযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি যখন নগদে আসলাম তখন দেখলাম এখানে সবার উদ্দেশ্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্থাৎ শুধু টাকা পাঠানো নয়, সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষকে আর্থিক ব্যবস্থায় নিয়ে আসা। আমাদের লক্ষ্য কম লাভে সকল স্তরের মানুষকে সেবা দেয়া।
তিনি বলেন, সবদিক বিবেচনা করে দেখলাম পুঁজিবাজারে কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা আমাদের নতুন আইডিয়া নিয়ে এসেছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।
তাসিয়া সিকিউরিটিজ’র চেয়ারম্যন বলেন, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। এখানে ব্যবসার অনেক সুযোগ রয়েছে। দেশের আর্থিক খাতে অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে এখনো কেউ আসেনি। আমরা সেসব জায়গায় কাজ করতে চাই। তবে শেয়ার মার্কেটে তারা নতুন কনসেপ্ট নিয়ে এসেছেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, তানিশা সিকিউরিটিজ নগদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান নয়। তবে নগদ থেকে তারা অনেক দিক নির্দেশনা পান। যা তাদের কাজকে আরো সহজ করে।
তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসার জন্য আমাদের পরিকল্পনা সাঁজিয়েছি। এখানে বিনিয়োগ আকৃষ্ঠ করতে আমরা রোড-শো সহ বিভিন্ন কর্মসুচিতে অংশগ্রন করছি। আমরা আশা করছি আমাদের এখানে বিপুল সংখ্যক বিদেশী বিনিয়োগ আনতে পারবো।
তিনি বলেন, আমি মনে করি শেয়ার বাজার বিদেশীদের বিনিয়োগের অন্যতম একটি জায়গা। বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে আমাদের অফিসের ডিজাইনও সে ভাবে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে নতুন কিছু দেয়ার লক্ষে একঝাঁক ইয়াং মানব সম্পদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যুবকদের শেয়ার বাজারে নিয়ে আসার জন্য সব ধরনের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সমস্যা মানুষ না জেনে বিনিয়োগ করে। আমরা বিনিয়োগকারিদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে শিক্ষা দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করবো।
তানিশা সিকিউরিটিজ’র ওয়েব ডিজাইনে সেভাবেই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠনটি একেক দিন একেক বিষয় নিয়ে আলাচনা করবে। এখানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে শিক্ষা দিয়ে বিনিয়োগকারিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে চান বলে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জানান।
তিনি বলেন, তাদের মুল টার্গেট বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। আর দেশের যুবসমাজকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করা।
দক্ষ মানব সম্পদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এতে একটি ফ্রেন্ড সার্কেল তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পরিচিত কয়েকজনকে নিয়ে কাজ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, এখন তারা দক্ষ এবং চৌকস মানব সম্পদকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। যাদের পুঁজিবাজার নিয়ে কাজের আগ্রহ রয়েছে। যারা শেয়ার বাজার সম্পর্কে শিখতে চায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই একসাথে স্বপ্ন দেখছি। কারন কোন কিছু বাস্তবায়ন করতে একা স্বপ্ন দেখলে হবে না। সবাইকে স্বপ্ন দেখতে হবে। আমরা প্রতিদিন আমাদের পরিকল্পনাগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি। আমরা আলোচনা করি কিভাবে আমাদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করা যায়।
দেশে এখন ৩০০ এর বেশি ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে। এতোসব হাউজ থাকতে বিনিয়োগকারিরা কেন আপনাদের হাউজে আসবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি এখানে যারা আসবে তারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। তারা নতুন কিছু করতে চায়। আমরা এসব বিনিয়োগকারিদের এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এসব বিনিয়োগকারিরা জানে এখানে এসে নতুন কিছু করা সম্ভব। তাই অনেক হাউজের মধ্যেও বিনিয়োগকারিরা আমাদের এখানে বিনিয়োগ নিয়ে আসবে।
আপনারা আপনাদের প্রতিষ্ঠানকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, আমরা এসেছি ভিন্ন কিছু করতে অর্থাৎ সকলকে আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য কাজ করতে চাই। তবে আমরা সবাই এক সাথে মিলে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আমরা ব্যবসার চেয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য কাজ করতে বেশি আগ্রহি।
আমরা ইতোমধ্যে ওএমএস নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এজন্য বেশ কয়েকটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। যেকোন সময় ওএমএস ব্যবস্থা চালু করতে তাদের প্রস্ততিও রয়েছে বলে তিনি জানান।
এএ